ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে অপরিকল্পিত উন্নয়নের প্রতিবাদে মশাল মিছিল

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
জাবিতে অপরিকল্পিত উন্নয়নের প্রতিবাদে মশাল মিছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের মহাপরিকল্পনাকে অপরিকল্পিত আখ্যা দিয়ে প্রকল্পের টাকা লুটপাট ও প্রকৃতি ধ্বংসের প্রতিবাদে মশাল মিছিল বের করেছে জাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত ৮টায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি টারজান পয়েন্ট, মেয়েদের হল, উপাচার্যের বাসবভন হয়ে পরিবহন চত্ত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

মিছিলে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

পাঁচদিনের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে ৩ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক কার্যালয় অবরোধের হুঁশিয়ারিও দেন বক্তারা।

এসময় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘আমরা মশাল হাতে নিয়েছি। এই মশাল যেমন সবকিছু জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়, ঠিক তেমন আলোকিতও করে। আমরা চাই আমাদের এই মশাল মিছিল জাহাঙ্গীরনগরকে আলোকিত করবে। যে লুটপাট শুরু হয়েছে, সেটা জাহাঙ্গীরনগরে চলতে দেওয়া হবে না। আমরা এই লুটপাটকে যেকোনো মূল্যেই হোক বন্ধ করবো। ’

উপাচার্যকে হুঁশিয়ারি দিয়ে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কোনো অপরাধ-দুর্নীতিকে কখনো গ্রহণ করে নাই এবং ভবিষ্যতেও করবে না। আমরা এতদিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, সন্ত্রাস নির্মূল করেছি। নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, নিপীড়ন নির্মূল হবে। কিন্তু আপনি যদি মনে করেন যাদের দুই কোটি টাকা দিয়েছেন তাদেরকে দিয়ে আপনি রক্ষা পাবেন, তাহলে সেটা ভুল হবে। ’

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মো. আশিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনার নামে লুটপাটকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অতীতে কোনো অন্যায়-অবিচারকে মেনে নেয়নি। আগমী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করবো। আপনি যদি দাবি মেনে না নেন, তাহলে আপনাদের জন্য ভবিষ্যতে ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, আমরা গাছ কাটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না । আমাদের আন্দোলন অপরিকল্পিত মহাপরিকল্পনার বিরুদ্ধে। আমাদের আন্দোলন লুটপাটের বিরুদ্ধে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কখনই রাষ্ট্রের জনগণের কষ্টের টাকা লুটপাট করতে দিবে না।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল হক রনি বলেন, আমরা জাতীয় দৈনিকে দেখলাম প্রকল্পের দুই কোটি টাকা উপাচার্য ছাত্রলীগকে ভাগ করে দিচ্ছেন। এই টাকা দেশের জনগণের টাকা। এই টাকা ছাত্রলীগকে ভাগ করে দেওয়ার অধিকার উপাচার্যের নাই। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউসিজি) বলেছেন- আমরা নাকি উন্নয়ন বিরোধী। কিন্তু আমরা উন্নয়ন বিরোধী না। আমরা চাই পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন হউক।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার আহ্বায়ক শাকিল উজ জামান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।