ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গমন কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৯
উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গমন কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: অনার্স ও মাস্টার্স লেভেলে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর বিদেশ গমন করছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। সংখ্যাটা দ্রুত বাড়তে থাকলেও তিন বছরের বিদেশ গমন কমেছে সাড়ে ৭ শতাংশ। সম্প্রতি জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল ফ্লো অব টারশিয়ারি লেভেল স্টুডেন্টস’ শীর্ষক সবশেষ প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবছর বাংলাদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে বিদেশে গমন করেছেন ৫৫ হাজার ৭৮৭ জন। যা ২০১৬ সালে ছিল ৬০ হাজার ৩৯০ জন।

শতকরা হিসেবে কমেছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ৩৩ হাজার ১৩৯ জন।  

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষার গুণগত মান জরুরি। পাশপাশি দেশের জন্য বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণেরও প্রয়োজনীয়তা আছে।
 
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বেশি পাড়ি জমিয়েছেন মালয়েশিয়ায়। এবছর দেশটিতে বাংলাদেশের ২৮ হাজার ৪৫৬ জন উচ্চশিক্ষা গ্রহণে গমন করেছেন। ২০১৬ সালে যা ছিল ৩৪ হাজার ১৫৫জন। মূলত অধ্যয়নের পাশাপাশি কাজের জন্য দেশটিতে যাওয়ার প্রধান কারণ মনে করছেন বিশ্লেষকরা।  

অপরদিকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে গমন করেছেন ৬ হাজার ৪৯২ জন। এরপরে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়া, যেখানে ৪ হাজার ৯৮৬ জন শিক্ষার্থী গিয়েছেন। যা ২০১৬ সালে ছিল ৪ হাজার ৬৫২ জন। তালিকার চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে ৩ হাজার ১১৬ জন শিক্ষার্থী গমন করেন। ২০১৬ সালে যা ছিল ৩ হাজার ৫৯৯ জন। সে হিসেবে দেশটিতে শিক্ষার্থী গমন কমছে। তালিকায় পঞ্চম স্থানে থাকা কানাডায় দুই হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী গেছেন। এরপরে ভারতে ১ হাজার ৫২৬ জন যা ২০১৬ সালে ছিল ১ হাজার ৯৯ জন। এছাড়া জাপান ৯৮২ জন, সৌদি আরব ৮৫৭, আরব আমিরাত ৬৩৭ জন।
 
অনার্স পাস করে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী চিশতী হোসাইন চৌধুরী। বাংলানিউজকে বলেন, নাগরিক হিসেবে দেশের প্রতি মৌলিক দায়িত্বগুলো আমরা এড়িয়ে যাচ্ছি বা রাষ্ট্রযন্ত্র এড়াতে বাধ্য করছে। ফলে দেশপ্রেম কিংবা দেশের প্রতি দায়িত্ববোধের জায়গাটি বিবেচনার বাইরে চলে যাওয়ায় কেবল উন্নত জীবনটিই মুখ্য হয়ে গেছে। আর সেই উন্নত জীবনযাপনকে অধিক উন্নত করার লক্ষ্যই বিদেশ গমনের অন্যতম হেতু।
 
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করা এহসান আব্দুল্লাহ উচ্চশিক্ষায় দেশের বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মূলত দেশের শিক্ষাব্যবস্থার নানা প্রতিবন্ধকতার কারণেই শিক্ষার্থীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হয়। আমাদের এখানে একবার একটি ডিসিপ্লিনে পড়াশোনা শুরু করলে তা পরবর্তীতে যোগ্যতা ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আর পরিবর্তন করার সুযোগ থাকে না ফলে অনেকেই পছন্দের ডিসিপ্লিনে পড়াশোনা করতে বিদেশমুখী হয়। এছাড়াও নানা প্রতিবন্ধকতার জন্য দেশে মানসম্মত গবেষণা করার সুযোগ বা বরাদ্দের অপ্রতুলতাও শিক্ষার্থীদের বিদেশমুখী হবার অন্যতম কারণ।

জার্মানিতে ফিনান্সিয়াল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অধ্যায়নরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নোমান চৌধুরী শিহাব বাংলানিউজকে বলেন, ভাষা জানা থাকলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে এসে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না। আমার কোনো ধরনের টিউশন ফি নেই এবং অনেক বেশি নিরাপদ। এখানে যদি কেউ আসতে চায় তাহলে তার প্রথম কাজ হবে ভাষা শেখা এবং সরাসরি বিশ্ববিদ্যালযয়ে আবেদন করা কোনো ধরনের এজেন্সির মাধ্যম ছাড়া।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৯
এসকেবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।