ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিক্ষা

হামলা-মামলায় ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল বন্ধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
হামলা-মামলায় ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল বন্ধ

ঢাকা: প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ রয়েছে ঢাকার সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের ক্লাস। গত ৫ ফেব্রুয়ারি কলেজটির সহকারী অধ্যাপক ডা. আ.জ.ম দৌলত আল মামুনের ওপর হামলার পর থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনো ক্লাস হয়নি। ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে থমথমে পরিবেশ। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্কও দেখা যাচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ক্যাম্পাসের সামনে কলেজের শিক্ষক দৌলত আল মামুনকে মারধর করে ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী কিছু শিক্ষার্থী। এরপর সে রাতেই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন মামুন।

মামলার আসামিরা হলেন- কলেজেটির ইন্টার্ন চিকিৎসক দুলালুর রহমান (ইউনানি) ও মাকসুদুর রহমান অ্যাপোলো (আয়ুবের্দিক), ২৫তম ব্যাচের (ইউনানি) শিক্ষার্থী শামীম হোসেন এবং মেডিকেল অফিসার (ইউনানি) ডা. আলমগীর হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জন। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করেনি।

এ বিষয়ে আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন ও একজন শিক্ষক অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের এখন কোনো কমিটি নেই কলেজে। কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী নিজেদের ছাত্রলীগের লোক বলে পরিচয় দিয়ে আসছে। তারা নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে প্রায়ই শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে। তারা শিক্ষক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপরও আক্রমণ করে আসছে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কলেজের শিক্ষক ডা. মহিবুল্লার মেয়েকে উত্যক্ত করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক দুলালুর রহমান। এর প্রতিবাদ করায় সেদিন রাতেই ডা. মহিবুল্লার বাসায় গিয়ে স্ত্রী-কন্যার সামনে তাকে লাঞ্ছিত করেন দুলালুর রহমান ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় ৫ ফেব্রুয়ারি জরুরি বৈঠক ডাকা হলে সেখানেও গালাগাল, হুমকি ও দরজায় লাথি দেন ছাত্রলীগ পরিচয়ধারী কয়েকজন। এর প্রতিবাদ করায় সেখানেই হামলার শিকার হন মামুন।  

আ.জ.ম. দৌলত আল মামুন বলেন, এর আগে ৬ শিক্ষার্থী কয়েকটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ার ঘটনায় গত ৩০ জানুয়ারি ডা. নাজমুল হুদাকে লাঞ্ছিত করেন কয়েকজন। তখন ওই শিক্ষককে হুমকি দিয়ে বলা হয়, আবার যদি তাদের ফেল করানো হয়, তাহলে তাদের পরবর্তী পরীক্ষার যাবতীয় খরচ ওই শিক্ষককেই বহন করতে হবে।  

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ছাত্রলীগের এসব নেতাকর্মীকে ইন্টার্ন চিকিৎসক দুলালুর রহমান মদদ দিচ্ছেন। দুলালুর ঢাকা চিকিৎসা বিজ্ঞান জেলা শাখার সরকারি ইউনানি আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৭ সালে স্বেচ্ছায় কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এরপরও দুলাল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে আসছেন নিজের। তার সহযোগী হিসেবে পরিচিত কলেজের শিক্ষার্থী শামীম, এজাজ এবং আল আমীন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে মামলার আসামি ডা. আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাবা অসুস্থ, হাসপাতালে তাকে নিয়ে ব্যস্ত আছি। আমি কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, তবে এখন সরকারি চাকরি করছি। মামলার বিষয়ে জানি না।  

মামলার আরেক আসামি ইন্টার্ন চিকিৎসক দুলালুর রহমান বলেন, যখন ঘটনা ঘটে আমি তখন ছিলাম না। স্যারের ওপর যখন হামলা হয়, সেখানে আমাদের কলেজের কেউ ছিল না। যিনি আমাকে মামলা দিয়েছেন, তিনি ভালো জানেন।

এ বিষেয় কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, মামলার বাদী এখন পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ করেননি। একবারও ফোনও দেননি। আসামিদের ধরতে আমাদের কোনো সহযোগিতাও করেননি। বাদীর সহযোগিতা পেলে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে পারতাম। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯
এমএমআই/এনটি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।