ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবির ছাত্রী হলে ঢুকে ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫
ইবির ছাত্রী হলে ঢুকে ছাত্রলীগ নেতার হুমকি

ইবি (কুষ্টিয়া): অনাবাসিক এক ছাত্রীকে হলে ওঠানোকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলে ঢুকে ছাত্রীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।

বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমদাদুল হক সোহাগ এ হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীদের।



এর আগে, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফা খাতুন আবাসিক ছাত্রীদের ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে ‘ধর্ষণ’ করানোর হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।

আবাসিক ছাত্রীদের অভিযোগ, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফা খাতুন কয়েক দিন থেকে হলের বিভিন্ন কক্ষে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনাবাসিক ছাত্রীদের ওঠানোর চেষ্টা করেছে।

কিন্তু বরাদ্দ ব্যাতিত কোনো ছাত্রীকে হলে ওঠানোর ব্যাপারে হল প্রভোস্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এতে কোনো অনাবাসিক ছাত্রীকে কক্ষে ওঠানোয় আপত্তি জানায় সংশ্লিষ্ট কক্ষের আবাসিক ছাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই হলের ছাত্রলীগ সভাপতি আরিফা অনাবাসিক এক ছাত্রীকে হলের ৩১২ নম্বর কক্ষের একটি সিটে ওঠাতে নিয়ে যান। এ সময় ওই কক্ষের আবাসিক ছাত্রী তমা ও মাহফুজা প্রভোস্টের অনুমুতি না থাকার বিষয়টি জানালে আরিফা ক্ষেপে যান। তিনি বিভিন্ন হুমকি দিয়ে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীদের বেড থেকে তাদের জিনিসপত্র ফেলে দেন।

এ সময় ছাত্রলীগ নেত্রী ওই ছাত্রীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং এক পর্যায়ে তাদের ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে ধর্ষণ করানোর হুমকি দেন তিনি।

এদিকে, এ ঘটনার জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি ১০/১৫ জন কর্মীকে নিয়ে ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে যান। হলের ভেতরে ঢোকার অনুমতি না থাকলেও ছাত্রলীগ কর্মী সুমনকে সঙ্গে নিয়ে বাকিদের হল গেটে রেখে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় সাধারণ ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পরে, ছাত্রলীগ নেতা মেয়েদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে অনাবাসিক ওই ছাত্রীকে নিয়ে হলের বাইরে আসেন। পরে, কর্মীদের নিয়ে হলের সামনের চায়ের দোকানে অবস্থান নেন তিনি।

এ সময় ওই ছাত্রীকে (অনাবাসিক) নিয়ে চলে যান ছাত্রলীগ কর্মী সুমন। সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ছাত্রী সুমনের বান্ধবী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী মেসে অবস্থান থাকেন।

খবর পেয়ে হল প্রভোস্ট ড. দেবাশীষ শর্মা রাত ৮টার দিকে হলে এসে ছাত্রীদের অভয় দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হল প্রভোস্ট আবাসিক ছাত্রীদের নিয়ে বৈঠক করছেন বলে জানা গেছে।

ঘটনার বিষয়ে প্রভোস্ট ড. দেবাশীষ শর্মা বাংলানিউজকে বলেন, আমি হল প্রশাসন নিয়ে এখন হলে রয়েছি। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, রাতের বেলা হলে ঢুকে কোনো মেয়েকে হুমকি দিলে সে ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হলে সিটের বিষয়ে প্রভোস্ট বলেন, হলের নিরাপত্তার স্বার্থে সিট বরাদ্দ ব্যতিত কোনো মেয়েকে হলে থাকতে দেওয়া হয় না। তার পরেও হল চালাতে গেলে আলোচনা সাপেক্ষে অনেক কিছুই করতে হয়। কিন্তু সেটা এভাবে নয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সোহাগ কুষ্টিয়ায় থাকে। ক্যাম্পাসে এসেছে সেটা আমি জানিনা। যদি মেয়েদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫     
এমজেড    

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।