ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বন্যায় মৌলভীবাজারে দেড়শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৬ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১০

মৌলভীবাজার: অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় জেলার হাকালুকি হাওর পাড়ের দেড়শ’শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

বড়লেখা উপজেলার চারটি, জুড়ী উপজেলার ছয়টি, কুলাউড়া উপজেলার দু’টি ইউনিয়ন পুরোপুরি বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া কমলগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন তৃতীয় দফা বন্যা কবলিত হয়েছে। চারটি উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর রোপা আউশ ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।

হাকালুকি হাওর পাড়ের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলার দেড়শ’ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে । বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে।

বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর পাড়ের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাবিজুরী পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলাদাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মূর্শিদাবাদ কুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাকালুকি এবতেদায়ী মাদ্রাসা, হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয় ও কানসাই বিদ্যালয়ের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। জুড়ী উপজেলার দণি জাঙ্গিরাই, উত্তর জাঙ্গিরাই, বেলাগাঁও, শাহপুর, নিশ্চিন্তপুর, দীঘলবাক, নয়াগ্রাম, হরিরামপুর, কালনীগড়, পূর্ব বেলাগাঁও, তালতলা-খাকটেকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকে দুই থেকে আড়াই ফুট পানিতে নিমজ্জিত।

এব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ জানান, স্কুলগুলোতে গ্রীষ্মের ছুটি সাত জুন পর্যন্ত চলছে। তাই এখন কিছু বলা যাচ্ছেনা। আট জুন জেলার সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রকৃত পরিসংখ্যান সংগ্রহ করা হবে।

জুড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিষ চাকমা জানান, অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। সোমবার পর্যন্ত বন্যায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ছয়টি আশ্রয় কেন্দ্রে এপর্যন্ত প্রায় এক হাজার দু’শ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম মুকুল জানান, উপজেলায় বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখা প্রায় ৬০ হাজার। বর্তমানে ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। এপর্যন্ত তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী জানান, কমলগঞ্জ উপজেলা তৃতীয় দফা বন্যা কবলিত হয়েছে। ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কমলগঞ্জের ইসলামপুর, মাধবপুর, মুন্সিবাজার ও পতনউষার ইউনিয়ন বন্যায় বেশি তিগ্রস্থ হয়েছে। আউশের ক্ষেত ও বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে।

কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ জেড এম নূরুল জানান, উপজেলার ভূকশিমইল ও কাদিপুর ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়েছে। এ ছাড়া কুলাউড়া পৌরসভাসহ আরো ছয়টি ইউনিয়ন আংশিক বন্যা কবলিত। নয়টি আশ্রয় কেন্দ্রে এ পর্যন্ত দু’শ পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। এই উপজেলায় বন্যা কবলিত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজারেরও বেশি।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১০-০৬-০৭
ফেরদৌস/বিকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।