ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এইচএসসি: লালমনিরহাটে ৬ প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৪
এইচএসসি: লালমনিরহাটে ৬ প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি!

লালমনিরহাট: এইচএসসি পরীক্ষায় লালমনিরহাটে ছয়টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। সবগুলো প্রতিষ্ঠানই টানা দুবারের সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের আসনে।

প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- আদিতমারী উপজেলার গন্ধমরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও  কলেজ, নামুরী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কালীগঞ্জ উপজেলার সোনারহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, শিয়াল খাওয়া কলেজ, দুহুলী এস সি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং কাকিনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।  

মঙ্গলবার প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জানা গেছে, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অংশ নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় লালমনিরহাটের দুই উপজেলার ছয়টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। সব প্রতিষ্ঠানই উচ্চ মাধ্যমিকের সঙ্গে সংযুক্ত কলেজ। যার মধ্যে গন্ধমরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে চলতি বছর আটজন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ পাস করতে পারেনি। নামুরী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে মাত্র একজন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েও ফেল করেছে।

শিয়ালখোয়া কলেজ থেকে তিনজন অংশ নিয়ে কেউ পাস করেনি। সোনারহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে তিনজনের সবাই ফেল করেছে। দুহুলী এসসি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং কাকিনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একমাত্র পরীক্ষার্থীরাও ফেল করেছে। নামুরী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজটি প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ এক যুগেও কেউ পাস করতে পারেনি।  

তবে লালমনিরহাটের কেউ পাস না করা ছয়টি প্রতিষ্ঠানই লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী কালীগঞ্জ) আসনে অবস্থিত। যে আসনে টানা দুবার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। মন্ত্রীর ক্ষমতায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও শিক্ষার মান ছিল নিম্নমুখী। প্রায় সব প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী শিক্ষক ছিলেন মন্ত্রীর দলীয় কাছের মানুষ। বিধায় ক্লাস না করেও নিয়মিত বেতন-ভাতা ভোগ করেছেন। এসব শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে না গেলেও মন্ত্রী বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বলে অভিভাবকদের অভিযোগ।

মোশারফ হোসেন নামে একজন অভিভাবক বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি তাদের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নুরুজ্জামান মন্ত্রীর চামচা ছিলেন। কলেজ না গেলেও মন্ত্রীর বাড়ি নিয়মিত যেতেন তারা। যদি কেউ পাস না করে সে প্রতিষ্ঠান রেখে লাভ কি। ভর্তির সময় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভর্তি করেন। পরে ক্লাস নেওয়ার কোনো খবর নেই। পাঠদান না থাকলে শিক্ষার্থীরা পাস করবে কেমনে। এমন নাম মাত্র প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।  

দুই উপজেলার দায়িত্বে থাকা আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। তাদের এমন ফলাফলের কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে আগামী দিনে এমন হতাশাজনক ফলাফল দেখতে না হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।