ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বিদ্যালয়টিতে ভীতি-উৎকণ্ঠায় ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪
বিদ্যালয়টিতে ভীতি-উৎকণ্ঠায় ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার রাঙ্গীছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক মাস যেতে না যেতেই শ্রেণিকক্ষ, বারান্দার উপরের দেয়ালের আস্তরণ খসে পড়েছে। ভবনটির বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল।

অনেক স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে।

এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা ভীতি ও আতঙ্ক নিয়েই ক্লাস করছেন।

আতঙ্ক নিয়েই চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেয়। নির্মাণ কাজের মাত্র কয়েক মাসের মাথায় ভবনের এই দশা দেখে ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিষয়টি লিখিতভাবে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কুলাউড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইফতেখায়ের হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ওই বিদ্যালয় সরেজমিনে পরিদর্শনে যাই। ঘুরে এসে আমি ইঞ্জিনিয়ারকে বলেছি যে, ‘পুরাতন ভবনে ঢুকতে মানুষ ভয় পায়। এখন দেখি নতুন ভবনে ঢুকতেও শিশুরা ও টিচাররা ভয় পাচ্ছেন। কোন সময় জানি ভেঙে পড়ে! তাহলে এটা কেমন হলো ব্যাপারটা? আমাদের এই বিল্ডিংগুলো তো বিশাল টাকার বিল্ডিং। এসব ভবন নির্মাণের পর ন্যূনতম ৫০ বছর পর্যন্ত যাতে এর কার্যক্ষমতা বজায় থাকে এমন সরাসরি নির্দেশনা এখানে রয়েছে। অথচ, আপনি যেটা বানাইলেন, এক-দেড় বছর যেতে না যেতেই বিল্ডিয়ের আস্তরণ খুলে খুলে পড়েছে। ’

ইফতেখায়ের আরও বলেন, আমার এ কথা শোনার পর ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, ‘যতদ্রুত সম্ভব তিনি তা মেরামত করে দেবেন। ’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা অফিসার বলেন, নবনির্মিত বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এই রাঙ্গীছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই অভিযোগ ছিল।

জানা যায়, চাহিদা ভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের (১ম পর্যায়) আওতায় ২০২১- ২০২২ অর্থ বছরে ৮২ লাখ ২৫ হাজার ৩১২ টাকা ব্যয়ে শ্রীমঙ্গলের মেসার্স সেলিম কনস্ট্রাকশন নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ পায়। তড়িঘড়ি করে নির্মাণ কাজ শেষ করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যালয়ের ভবনটি কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বছর খানেক থেকে নতুন ভবনের নিচতলায় দুটি ক্লাসরুম ও একটিতে অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র দাস জানান, পলেস্তারা পরার বিষয়টি শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের অবগত করেন। প্রায় দুইশো ছাত্র- ছাত্রী এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে অনেক প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি চারতলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন পাই। কিন্তু কাজ শেষ হতে না হতেই নানা জায়গায় ফাটল ও পলেস্তারা পড়ে যাওয়াটা বলে দেয় কাজে কতটা অনিয়ম হয়েছে।  আরও একাধিক স্থানে ত্রুটি রয়েছে।  

শিক্ষক শামীম উদ্দিন আহমদ বলেন, ২য় প্রান্তিক মূল্যায়নের কারণে কিছু শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে আসছে। সবাই আতঙ্কে থাকি। কখন উপর থেকে কিছু খসে পড়ে।

অভিভাবক সত্য নাইডুসহ অনেকেই কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত পুরোনো ভবনের পলেস্তার নতুনভাবে করা। এ সমস্যা সমাধান না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।  

এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনে দ্রুত আমি তদন্ত গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত দলের প্রতিবেদন পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪
বিবিবি/এসএএইচ                        

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।