ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রাবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে বিদেশি পিস্তল, সম্পাদকের কক্ষে দেশীয় অস্ত্র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৪
রাবি ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে বিদেশি পিস্তল, সম্পাদকের কক্ষে দেশীয় অস্ত্র

রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির রুম থেকে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুটি পিস্তল ও সাধারণ সম্পাদকের রুম থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে কোটা আন্দেলনকারীরা। এরপর বুধবার (১৭ জুলাই) ক্যাম্পাসের 'পলিটিক্যাল ব্লক' খ্যাত শহীদ হবিবুর রহমান হল থেকে আরও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে আন্দোলনকারীরা।

বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা এগারোটার দিকে শহীদ হবিবুর রহমান হলের প্রথম ব্লকের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নাম্বার কক্ষ ও তৃতীয় তলার কয়েকটি কক্ষ থেকে এসব দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছেন কোটা আন্দোলনকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের মিছিল থেকে কিছু শিক্ষার্থী হবিবুর রহমান হলে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা প্রথম ব্লকের দ্বিতীয় তলার ২০৭ ও ২০৮ নাম্বার কক্ষ ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন। সে সময় তারা পাঁচটির বেশি ধারালো রামদা উদ্ধার করেন। এ সময় কয়েকজন রুমের জিনিসপত্র ভাঙচুর করার পাশাপাশি কিছু জিনিস ভবনের নিচেও ফেলে দেন।

এরপর দুপুর ১২টার পর কোটা আন্দোলনকারীরা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় 'কোটা না মেধা, মেধা মেধা', 'দিয়েছিতো রক্ত, আরও দিবো রক্ত', আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিবোনা', জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে', 'রাবিয়ানদের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন'সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।

এর আগে বুধবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন কোটা আন্দোলনকারীরা। এরপর তারা বিভিন্ন হলের সামনে মিছিলসহ গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে করে নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে কিছু সময় মিছিল করে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে জড়ো হন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের কক্ষ ভাঙচুর করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে তল্লাশি চালান। এ সময় সভাপতির কক্ষ থেকে দুইটি বিদেশি পিস্তল, রামদা ও বিদেশি মদ এবং সম্পাদকের কক্ষে বিপুলসংখ্যক খালি ফেনসিডিলের বোতল ও দেশীয় অস্ত্র বের করেন বিক্ষুব্ধরা। এছাড়া ছাত্রলীগের একাধিক নেতার কক্ষে দেশীয় অস্ত্রও দেখতে পান আন্দোলনকারীরা।  

এ খবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেওয়া হলে তারা থানা পুলিশের মাধ্যমে এগুলো জব্দ করা হবে বলে জানান। কিন্তু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হলেও কক্ষে কোনো পিস্তল পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক।  

তবে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর কক্ষের লকারে দুইটি পিস্তল, তার ব্যক্তিগত পাসপোর্ট ও কয়েকটি মদের ফাঁকা বোতল দেখা গেছে। এছাড়া শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের কক্ষে ১৫ থেকে ২০টি ফেনসিডিলের ফাঁকা বোতল দেখা গেছে।  

যদিও রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, প্রথম দফায় হামলার সময় আন্দোলনকারীরাই তার কক্ষে এসব রেখে গিয়েছিল। দ্বিতীয়বার হামলার সময় সেসব অস্ত্র সাংবাদিকদের ডেকে দেখিয়েছে। এগুলো কোনোভাবেই তার নয়। আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন হলে হলে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রুমে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সার্টিফিকেট জ্বালিয়ে দিয়েছে। এটি খুবই পরিকল্পিত হামলা ছিল। আর যারা হামলা করেছে তারা শিক্ষার্থী নয়, তারা বিএনপি জামায়াতের সঙ্গী বলেও জানান, রাবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫  ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৪
এসএস/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।