ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আঁকা ছাত্রদের বহিষ্কার বাতিল চায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
জাবিতে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আঁকা ছাত্রদের বহিষ্কার বাতিল চায় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

ঢাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কনকারী দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।  

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নেটওয়ার্কের ৫৮ শিক্ষক এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

শিক্ষকদের পক্ষে বিবৃতি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপন ড. গীতি আরা নাসরীন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদ ভবনের দেয়ালে পূর্বে আঁকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে একটি ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন করেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা।  

এ ঘটনায় ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অমর্ত্য রায় ও সাধারণ সম্পাদক  ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অমর্ত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের দেয়ালের একটি পুরোনো দেয়ালচিত্র মুছে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কনের অভিযোগে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ’ 

‘এই বহিষ্কারাদেশ ও বহিষ্কারকরণ প্রক্রিয়ার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে এমন অনানুষ্ঠানিক দেয়ালচিত্র অঙ্কন, তা মুছে ফেলে নতুন চিত্র অঙ্কন, পুরোনো বা ছেঁড়া পোস্টারের ওপর নতুন পোস্টার সাঁটানো একটি নিত্য ঘটমান বাস্তবতা। সেই বাস্তবতায় এই দুইজন ছাত্রনেতার একটি গ্রাফিতি অঙ্কনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে এক বছরের বহিষ্কারাদেশের মতো দণ্ড যুক্তিসংগত ও বোধগম্য নয়। ’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্দেশ্যমূলকভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো সম্মানীয় ব্যক্তিত্বের ইমেজকে এই ইস্যুতে ঢাল হিসেবে ‘ব্যবহার’ করার চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক, বিব্রতকর ও নিন্দনীয়। ”

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এই তদন্ত কমিটির প্রধান যে শিক্ষক, তিনি নিজেও বিভাগের সহকর্মীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত হয়ে পদাবনতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। এমন একজন ব্যক্তিকে এ ধরনের গুরুতর তদন্ত কমিটির প্রধান করায়, তদন্ত কমিটির নৈতিক অবস্থান নিয়েও স্বভাবতই প্রশ্ন এসে যায়। ফলে, তদন্ত কমিটির যে কোনো সুপারিশই আসলে প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন যারা 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী।  

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক খান, সহযোগী অধ্যাপক কাজলী সেহরীন ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।  

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের প্রভাষক অলিউর সান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন।  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ মইনুল আলম নিজার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. মাসউদ ইমরান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মানস চৌধুরী, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদা আকন্দ, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাবিকুন নাহার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী,

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব জেনারেল এডুকেশন সহকারী অধ্যাপক সৌমিত জয়দ্বীপ, প্রভাষক মিম আরাফাত, স্কুল অব জেনারেল এডুকেশন সিনিয়র লেকচারার ইসমাইল সাদী, স্কুল অফ জেনারেল এডুকেশনের প্রভাষক আর এ এম হাসান তালুকদার, ইএসএস সহকারী অধ্যাপক শরৎ চৌধুরী।  

স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ নাহিদ নিয়াজী।  

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইমরান কামাল, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামজীর আহমেদ,ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহফুজ হাসান ভূঁইয়া, বাংলা বিভাগের সিনিয়র লেকচারার মিজানুর রহমান খান।  

ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আর্কিওলজিকাল স্টাডিজের প্রভাষক কাব্য কৃত্তিকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরাফাত রহমান। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর এক্সপেরিমেন্টাল হিউম্যানিটিজ ভিজিটিং প্রফেসর ফাহমিদুল হক।  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আইনুন নাহার, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক সায়েমা খাতুন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক স্বাধীন সেন, অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।  

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ এশিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজেস অ্যান্ড সিভিলাইজেশনস, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো তৈমুর রেজা।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোশরেকা অদিতি হক, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খাদিজা মিতু, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সায়মা আলম।  

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌম্য সরকার, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অভিনু কিবরিয়া ইসলাম।  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা,পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জীবন কৃষ্ণ মোদক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাকিলা আলম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪
জেডএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।