ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ছুটিতে বিদেশ গিয়ে বছর কাটালেন শিক্ষিকা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
ছুটিতে বিদেশ গিয়ে বছর কাটালেন শিক্ষিকা!

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ৭৯ পূর্ব লামনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শারমিন আক্তার লিজা এক মাসের মেডিকেল ছুটি নিয়ে যুক্তরাজ্যে গিয়ে স্টুডেন্ট ভিসায় এক বছর ধরে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  

তবে তার পরিবারের দাবি, লিজা অসুস্থ।

কিন্তু সোস্যাল মিডিয়ায় তার পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, তিনি বিদেশে নানা স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে শিক্ষক সংকটে পাঠদানে বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে অন্য শিক্ষকদের। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ৭৯ পূর্ব লামনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৪১ ছাত্রছাত্রীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ছয়জন। সেখানে ৩০ দিনের ছুটি নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে যান সহকারী শিক্ষিকা শারমিন আক্তার লিজা। সেই ছুটি শেষ হয়ে এক বছর পার হলেও তিনি এখনও বিদ্যালয়ে আসেননি। কিন্তু তার চাকরি এখনও বহাল রয়েছে। তবে বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে বার বার জানানো হলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অদৃশ্য কারণে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
 
এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। একজন শিক্ষকের জন্য বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) শারমিন আক্তার লিজার বড় বোন‌ স্বপ্না বলেন, আমার বোন দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিল। সে এখনো অসুস্থ রয়েছে বিদেশে। আজ আমরা তার চাকরির রিজাইন লেটার স্কুলে পৌঁছে দিয়েছি। সে বাংলাদেশে কবে আসে, সেটা ঠিক বলা যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে ৭৯ পূর্ব লামনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হেলেনা বেগম বলেন, এমনিতেই আমার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কম। তার মধ্যে লিজা এক মাসের ছুটি নিয়ে গেছেন। কিন্তু এখন এক বছর হয়ে গেল, তার কোনো খোঁজ খবর নেই।  

তিনি আরও জানান, গতকাল হঠাৎ করেই লিজা তার বোনের মাধ্যমে একটি অব্যাহতির আবেদন পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। আমি সেটি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের মাধ্যমে শিক্ষা অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছি।

গলাচিপা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মীর রেজাউল ইসলাম জানান, ইস্তফা পত্রটি পেয়েছি। এখন জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়ে দেব। তবে আমি আগেও বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারকে একাধিক বার জানিয়েছি। ওই শিক্ষিকা বিদেশে যাওয়ার পর থেকে আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি। আজ হঠাৎ করেই তার পরিবারের পক্ষ থেকে তার বড় বোন আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোল্লা বক্তিয়ার রহমান বলেন, লিজার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। এরপর নীতিমালা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।