ঢাকা: আগামী ১৭ আগস্টই শুরু হচ্ছে ২০২৩ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এবার পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন পরীক্ষার্থী।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নিয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।  

সারা দেশে দুই হাজার ৬৫৮টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি বছর সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণসময়ে পরীক্ষার্থীরা অংশ নেবে। তবে আইসিটিতে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে।  

শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ছয় লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ছয় লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। সারা দেশে মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় হাজার ১৬৯টি। ২০২২ সালে সব বোর্ড মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১২ লাখ তিন হাজার ৪০৭ জন। সেই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ জন।

মন্ত্রী জানান, দেশের নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেবে ১১ লাখ ৮ হাজার ৫৯৪ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ২৫১ জন এবং ছাত্রী পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ৩৪৩ জন। মোট কেন্দ্র এক হাজার ৫৩৫ এবং মোট প্রতিষ্ঠান চার হাজার ৬৪৭টি।  

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৯৮ হাজার ৩১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৫৩ হাজার ৬৩ জন এবং ছাত্রী ৪৪ হাজার ৯৬৮ জন। মোট কেন্দ্র ৪৪৯টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুই হাজার ৬৮৮টি।  

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল) ও ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষায় অংশ নেবেন এক লাখ ৫২ হাজার ৭১৭ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র এক লাখ নয় হাজার ৫৭৩ জন এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ১৪৪ জন। মোট কেন্দ্র ৬৭৪টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক হাজার ৮৩৪টি।  

বিদেশ কেন্দ্র

জেদ্দা, রিয়াদ, ত্রিপলী, দোহা, আবুধাবি, দুবাই, বাহরাইন, সাহাম, ওমান মোট আটটি কেন্দ্রে ৩২৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে।  

শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, আগামী ১৭ আগস্ট থেকে দেশে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ১৪ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ৪৩ দিন সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

২০২৩ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে পূর্ণ নম্বর ও সময়ে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৭ আগস্ট হতে শুরু হয়ে শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৬ সেপ্টেম্বর হতে শুরু হয়ে শেষ হবে ৪ অক্টোবর।  

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৭ আগস্ট হতে শুরু হয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ সেপ্টেম্বর হতে শুরু হয়ে ৪ অক্টোবর শেষ হবে।  

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১৭ আগস্ট হতে শুরু হয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৫ সেপ্টেম্বর হতে শুরু হয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর শেষ হবে।  

৩০ মিনিট পূর্বে কেন্দ্র প্রবেশ করতে হবে

অন্যান্য বছরের মতো এবারও পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরে প্রবেশ করতে দিলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিখে প্রবেশ করবে। তবে তার এই দিনের দেরিতে প্রবেশের কারণ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে। তবে তা সাড়ে ১০টার বেশি হবে না।  

এসএমএসের প্রশ্ন সেট নির্ধারণ

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে।  

স্মার্ট ফোন নিয়ে কেন্দ্র প্রবেশ নিষেধ

পরীক্ষা হল থেকে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে এবারও স্মার্ট ফোন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে শিক্ষাবোর্ড। শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন (তবে ছবি তোলা যায় না এমন মোবাইল ফোন)।

পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা (যেমন পরীক্ষার্থী, কক্ষ পর্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, বোর্ডের কেন্দ্র পরিদর্শন টিম, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ব্যতীত) অন্য কেউই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

বিশেষ চাহিদা সম্পূর্ণ শিক্ষার্থী পাবেন অতিরিক্ত ২০ মিনিট

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিলাদের হাত নেই এখন (শ্রুতিলেখক) পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম, সেবিব্রালপালসি) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিটসহ শিক্ষক, অভিভাবকদের সাহায্য নিতে পারবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৩
এমআইএইচ/আরআইএস