ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বগুড়ায় কার ভুলে ২৩ শিক্ষার্থী ফেল? 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৩
বগুড়ায় কার ভুলে ২৩ শিক্ষার্থী ফেল? 

বগুড়া: বগুড়ায় ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর যোগ না হওয়ায় কাহালু মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ২৩ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী ফেল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

 

এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিব শিক্ষা বোর্ডকে ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন্দ্র সচিবকে দুষছেন।

শনিবার (২৯ জুলাই) বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী অভিভাবকেরা বগুড়ার কাহালু মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করেন।

এ সময় সমস্যা সমাধানের জন্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর লিখিত আবেদন জমা দেন তারা।  

ফলাফলে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কেন্দ্র থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের উদাসীনতার কারণে তাদের এমন ক্ষতি হয়েছে। তবে কেন্দ্র সচিবের দাবি, তিনি ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরপত্র বোর্ডে পাঠিয়েছেন। বোর্ডের ভুলের কারণেই এমনটা হয়েছে।

জানা গেছে, এ বছর কাহালু সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০৮ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তাদের কেন্দ্র ছিল কাহালু তাহেরুন্নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। শুক্রবার (২৮ জুলাই) প্রকাশ হওয়া ফলাফলে দেখা যায়, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ জন শিক্ষার্থী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। অথচ তারা সবাই ওই বিষয়ে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ  নিয়েছিল।  
ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর পত্র যথাসময়ে শিক্ষা বোর্ডে না পাঠানোর কারণেই এমনটা হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষার্থীরা।  

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহাদত জামান বলেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি রেজাল্ট দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু আমার সাথে এমন হয়নি। আমাদের ব্যাচের ২৩ জন শিক্ষার্থীর সাথে একই ঘটনা ঘটেছে। আজ আমরা সবাই লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না।

তানভীর ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমি সব পরীক্ষা অনেক ভালো দিয়েছিলাম। সব বিষয়ে আমার মার্কস ভালো এসেছে। শুধু একটা বিষয়ে ফেল আসার জন্য আজ জীবনটা এলোমেলো হয়ে যাওয়ার পথে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

সাহারা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, ব্যবহারিক নম্বর পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের হাত দিয়েই দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের মার্কশিটে ব্যবহারিক নম্বর যোগ না হওয়ায় সবাই ফেল করেছে। কেন এমনটা হলো, তার কোনো উত্তর মিলছে না। এর জন্য বগুড়ার কাহালু মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও দায়ী। তারা মনিটরিং করলে এমনটি হতো না।  

অভিযোগের বিষয়ে কাহালু সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এফ.এম.এ. ছালাম বলেন, তাহেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্র সচিব বেলাল উদ্দিন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বিধি অনুসারে নম্বরপত্র না পাঠানোর কারণে ২৩ জন শিক্ষার্থী ওই বিষয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে। আমরা বোর্ডে কথা বলেছি সেখান থেকে জানানো হয়েছে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর পত্র না পাওয়ার কারণে তাদের ওই বিষয়ে ফলাফল আসেনি। তাহেরুন্নেছার প্রধান শিক্ষককে এ ব্যাপারে দ্রুত সমাধান করার জন্য জানানো হয়েছে।

তাহেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিন জানান, কেন্দ্র থেকে সব শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরপত্র যথা সময়ে পাঠানো হয়েছিল। বোর্ডের ভুলের কারণে এমন হয়েছে। রোববার (৩০ জুলাই) বোর্ডে যাব। তখন বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

বগুড়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর যোগ না হওয়া নিয়ে কেন্দ্র সচিব শিক্ষা বোর্ডকে ও কাহালু মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেন্দ্র সচিবকে দোষারোপ করেছেন। এই নিয়ে ইতিমধ্যে বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। রোববার দুই প্রধান শিক্ষক রাজশাহী গিয়ে বিষয়টি সমাধান করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৩
কেইউএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।