ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবির বর্জ্য অপসারণে মাসে দেড় লাখ টাকা চায় ইজারাদার

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৭ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০২৩
জবির বর্জ্য অপসারণে মাসে দেড় লাখ টাকা চায় ইজারাদার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্জ্য অপসারণ করতে প্রতিমাসে দেড় লাখ টাকা দাবি করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের জন্য নিবন্ধনকৃত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। এ বিষয়ে বর্জ্য সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর একটি চিঠিও দিয়েছে।

তবে এ দাবিকে যুক্তিসংগত নয় বলছে খোদ সিটি করপোরেশন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য অপসারণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কখনও কোনো টাকা বা ফি গ্রহণ করেনি। শুরুর দিকে শাঁখারিবাজার মোড়ে থাকা কন্টেইনারে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য নিয়ে ফেলতো। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে ময়লার ভাগাড় রাখা হতো আর রাতে নিয়ে যেতো সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা। পরে কন্টেইনারটি বাংলাবাজার ফুটওভার ব্রিজের নিচে নেওয়া হয়। তখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ফি নেওয়া হতো না। তবে বর্জ্য অপসারণে ডিএসসিসির নতুন ঠিকাদার দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্চ মাসে ফি পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠায় সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ডিএসসিসির ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত সব সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক/বিমা, বাসা-বাড়ি, দোকানপাট থেকে সৃষ্ট বর্জ্য আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারণ করে সেবা দিয়ে আসছে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন থেকে প্রতিদিন গড়ে আট ভ্যান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই ভ্যান করে বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে হলে দাবি করে তারা। এতে তিনটি ভ্যান ও তার বিপরীতে চালকসহ ছয়জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর প্রত্যেকের প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা বেতন ধরে মোট ৯০ হাজার টাকা এবং একজন সুপারভাইজারের ২০ হাজার টাকা বেতন দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও ভ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মীদের নাস্তা বাবদ প্রতিমাসে আরও ১০ হাজার টাকা এবং লাভ হিসেবে আরও ২০ হাজার টাকাসহ মোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি প্রতিষ্ঠানের চুক্তির কথাও উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে প্রতিষ্ঠানটির এ দাবিকে যুক্তিসংগত নয় বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ফি নির্ধারণের কথা জানিয়েছে ডিএসসিসি। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথাও বলে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর মালিক মোহাম্মদ সালামত হোসেনকে বারবার ফোন কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা বাসা প্রতি ময়লার বিল সর্বোচ্চ ১০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তবে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদার আলাপ-আলোচনা করে ফি নির্ধারণ করবে। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিনিধি দলও থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ফি দাবি করছে তা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বসে সমঝোতা করে চূড়ান্ত ফি নির্ধারণ করবে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আগে বর্জ্য অপসারণের জন্য টাকা নেওয়া হতো না। নতুন ঠিকাদার এসে টাকা দাবি করেছে। পরিচ্ছন্নতা কমিটির আহ্বায়কের মৌখিক অনুরোধে একমাস তারা ফ্রিতে বর্জ্য অপসারণ করেছে। এরপর থেকে ফি দেওয়ার জন্য ঠিকাদার চাপ দিতে থাকে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। এ ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেবে।  

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে তারা বর্জ্য অপসারণ করছে না। আমি ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রহমান ভাইকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি বর্জ্য অপসারণের আশ্বাস দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২৩
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।