ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ভর্তিচ্ছুদের পদচারণায় মুখরিত শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
ভর্তিচ্ছুদের পদচারণায় মুখরিত শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

শাবিপ্রবি (সিলেট): গুচ্ছের 'বি' ইউনিটের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাস।

সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার (২০ মে) সকাল থেকে সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা শাবিপ্রবি কেন্দ্রে আসতে শুরু করেন।

কেউ কেউ বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে, কেউ বাবা-মায়ের সঙ্গে, কেউবা নিজে নিজে এসে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন।

এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার লক্ষ্যে পুরো ক্যাম্পাসে প্রক্টরিয়াল বডির টহল চলমান রয়েছে। পাশাপাশি কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এর সদস্যরা, শিক্ষক, কর্মকর্তা, নিরাপত্তা প্রহরী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ সংলগ্ন হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা এবং শিক্ষার্থী অভিভাবকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ২০টি বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ।

সিলেটের সুনামগঞ্জ থেকে আগত রাকিব হোসেন নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, আমার অনেক স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার। ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতিও নিয়েছি, পরীক্ষাটা ভালো হলেই হয়। তিনি বলেন, গুচ্ছের পরীক্ষা নিজ অঞ্চল হওয়ায় যাতায়াতে তেমন সমস্যায় পড়তে হয়নি। এখন ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করে বাড়িতে পৌঁছাতে পারলে হয়।  

আয়েশা হাবিবা নামের আরেক ভর্তিচ্ছু বাংলানিউজকে বলেন, নির্ঘুম রাত পার করে অনেক কষ্টে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা শেষ করে এখানে পরীক্ষা দিতে এসেছি। একটু বিশ্রামেরও সুযোগ পাইনি, দেখা যাক কি হয়।

আব্দুল রহিম নামের এক অভিভাবক বাংলানিউজকে বলেন, পরিবারে আর কেউ না থাকায় মেয়েকে নিয়ে পরীক্ষার হলে এসেছি, পরীক্ষা শেষ না হওয়া অব্ধি এখানে অপেক্ষা করব। ক্যাম্পাসের পরিবেশ নিরিবিলি আছে, তবে বসার জন্য আরেকটু ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।

হতাশা জানিয়ে মাজহারুল ইসলাম নামের আরেক অভিভাবক বাংলানিউজকে বলেন, গতকাল আমার ছেলের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিল। তাকে নিয়ে পরশু দিন (বৃহস্পতিবার) সিলেট ছেড়েছি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিলেটের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছি। তবে ট্রেনের টিকেট পাওয়ায় অনেক কষ্টে বাসের সিটের ব্যবস্থা করেছি। একটুও বিশ্রামেরও সুযোগ পাইনি, সেও বিশ্রাম করতে পারেনি, তাই পরীক্ষা খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে সমন্বয় করে পরীক্ষা নিতে পারত। তাতে পরীক্ষার্থী ও আমাদের কষ্ট অনেকটা লাঘব হত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শৃঙ্খলা উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে আমরা ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছি, তবে এ সময়ে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষে ক্যাম্পাস ও আশেপাশে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভালোভাবে পরীক্ষা শেষ করতে চাই। ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতি ঠেকাতেও আমরা সর্তক অবস্থানে আছি। এতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।

এদিকে গুচ্ছের 'বি' ইউনিটের পরীক্ষায় শাবিপ্রবি কেন্দ্রে ২ হাজার ৫শ’ ৬১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। পরীক্ষাটি দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের শিক্ষা ভবন 'এ' 'বি' ‘সি’ এবং 'ডি' ভবনে অনুষ্ঠিত হবে। এবার গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে (মানবিক) সারাদেশ থেকে ৯৬ হাজার ৪শ’ ৩৪ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।