ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

যৌতুক মামলায় জরিমানা গুণেও সরকারি চাকরিতে বহাল প্রধান শিক্ষিকা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
যৌতুক মামলায় জরিমানা গুণেও সরকারি চাকরিতে বহাল প্রধান শিক্ষিকা

বরগুনা: বরগুনার আমতলী উপজেলার হরিমৃতঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (চলতি দায়িত্ব) ফিরদৌসি বেগম পুত্রবধূর করা যৌতুক মামলায় জরিমানা গুণেছেন। আর্থিক দণ্ড হওয়ার পরও তিনি সরকারি চাকরিতে রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

মামলার বাদী আদালতের রায়সহ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করতে যাচ্ছেন উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে।

ভূক্তভোগী নাজমুন নাহার এবং মামলা সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার উত্তর টেপুরা গ্রামের মো. আবুল হেসেনের মেয়ে নাজমুন নাহার ও আমতলী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈয়দ আফাজ উদ্দিন চুন্নু মিরা এবং হরিমৃতুঞ্জয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (চলতি দায়িত্ব) ফিরদৌসি বেগমের ছেলে সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন হাদি সাজিবের বিয়ে হয় ২০০৯ সালের ১৭ নভেম্বর।
বিয়ের সময় মেয়ের বাবা ছেলেকে নগদ টাকা, মেয়ের জন্য সোনার গহনা, সংসারের যাবতীয় প্রয়োজনীয় মালপত্র দিয়ে দেন। তারপরও প্রায়ই মা-ভাইয়ের প্ররোচনায় স্ত্রীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক এবং একটি মোটরসাইকেল দাবি করে আসছিলেন যৌতুক লোভী ইজাজ। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় ইজাজ, তার মা ফিরদৌসি এবং ভাই শাহরিয়ার ঘরের দরজা বন্ধ করে নাজমুন নাহারকে ব্যাপক মারধর করেন। একপর্যায়ে ইজাজ জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে নাজমুন নাহারের সারা শরীর ঝলসে দেন এবং পিটিয়ে জখম করেন। খবর পেয়ে নাজমুন নাহারকে তার বাবা-মা  বাড়ি নিয়ে যান।

এ ঘটনায় নাজমুন নাহার বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। সাক্ষ প্রমাণ শেষে ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর মামলার রায় দেন আদালত। রায়ে সৈয়দ ইজাজ উদ্দিন সজিবকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া তার মাকে আট হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।  

রায়ের পর নাজমুন নাহার তার শাশুড়ি ফিরদৌসি বেগমের ব্যাপারে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে আমতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও বরগুনা জেল প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন।

অভিযুক্ত ফিরদৌসি বেগম বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আমি আপিল করব।

নাজমুন নাহার বলেন, আদালতে আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমার শাশুড়ির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতেও আবেদন করেছি। আশা করি, আমি সেখানেও ন্যায় বিচার পাব।

আমতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, যৌতুক মামলায় আদালতের রায়ে ফিরদৌসি নামে এক শিক্ষিকার আর্থিক দণ্ড হয়েছে। রায়ের কপিসহ বাদীর একটি আবেদন পেয়েছি। আমার মতামতসহ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদনটি জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকারি চাকরির বিধি অনুযায়ী ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।