ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কামালপুর স্থলবন্দর উন্নয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে

গোলাম রাব্বানী নাদিম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
কামালপুর স্থলবন্দর উন্নয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে

জামালপুর: জামালপুরের সীমান্তবর্তী বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দর উন্নয়নের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়নাধীন এই উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এ টাকা দিয়ে ৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চলমান প্রকল্পটি ২০২৩ সালে ৩০ জুন শেষ হওয়া কথা রয়েছে। কাজের গতি অনুযায়ী প্রকল্পের সময় সীমা শেষ হওয়ার আগেই প্রকল্পগুলো শতভাগ বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করছেন স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম।

তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৩০ জুনের আগেই এই স্থলবন্দরের কাজ শতভাগ শেষ হবে। আর কাজ শেষ হলেও পুরোদমে কামালপুর স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে। স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি আর্থ সামজিক অবস্থার আমূল পরির্তন ঘটবে।

জামালপুর জেলার একমাত্র স্থলবন্দর বকশীগঞ্জের ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর। কাজের মধ্যে রয়েছে জমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন, সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, ওপেন স্ট্যাক ইয়ার্ড, পার্কিং ইয়ার্ড, ওয়ার হাউজ, ভবন, ড্রেনেজ সিস্টেম, টয়লেট কমপ্লেক্সে, ওয়েব্রিজসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ।

গত বছর কামালপুর স্থলবন্দর নির্মাণের জন্য ১৫.৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। সেখানে অবকাঠামো ও বাউন্ডারি ওয়ালসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্রে মের্সাস আশরাফুল ইসলাম জেবি ও মের্সাস তমা কনস্ট্রাকশন নামে দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর স্টক ইর্য়াড, পার্কিং ইয়ার্ড ও স্থলবন্দরের মধ্যে রাস্তা নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকার দরপত্র শেষে কাজ পায় ‘মের্সাস আশরাফুল ইসলাম জেভি’। কাজের মেয়াদ ধরা হয় ৮ মাস। চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হয়।

 এদিকে একই বছরের ২৭ নভেম্বর ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস তমা কনস্ট্রাকশন। সীমানা প্রাচীরের পাশাপাশি ভূমি উন্নয়ন ও ড্রেন নির্মাণের কথা রয়েছে তাদের। কাজের মেয়াদকাল ধরা হয় ৮ মাস। চুক্তিপত্র অনুযায়ী সেটিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ হয়েছে।

অধিগ্রহণকৃত ভূমি মালিকদের বাধার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজই শুরু করতে না পারলেও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তাগিদের কারণেই এমনটি সম্ভব হয়েছে বলে জানা গেছে।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত কামালপুর স্থলবন্দর দিয়ে বছরে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে সরকার। এই বন্দর দিয়ে প্রধান আমদানি পণ্য হচ্ছে পাথর ও কয়লা।  

এছাড়া গম, কাঠ, রাসায়নিক সার, মরিচ, রসুন, চাল, শুঁটকি মাছ, চুনাপাথর, বলক্লে, গমের ভুসি, গোল মরিচ, তেজপাতা, বিভিন্ন জাতের ডাল, টমেটো, জিরা, আদা, সুপারি, বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রীর কাঁচামাল, মাছের পোনা, তাজা ফলমুল আমদানির পাশাপাশি সরকার অনুমোদিত সব ধরনের রপ্তানিও হয়।

অবকাঠামোসহ নানান অসুবিধা থাকা স্বত্বেও চলতি অর্থ বছরে করোনার কারণে স্থলবন্দর বন্ধ থাকলেও ২ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় করেছে এই স্থলবন্দরের।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে কামালপুর এলসি স্টেশনকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরে ২০১৮ ডিসেম্বর মাসে এ বন্দরের আধুনিয়কায়নের জন্য ১৫.৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কামালপুর স্থলবন্দর হিসাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় বন্দরটি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে এটি এলসি স্টেশন হিসেবে চালু করা হয়। পরে ২০১৫ সালে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।