ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলেই হারাতে হবে ৯০ শতাংশ বাণিজ্য সুবিধা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
‘উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলেই হারাতে হবে ৯০ শতাংশ বাণিজ্য সুবিধা’ অধ্যাপক ড. মুস্ফাফিজুর রহমান: ফাইল ফটো

ঢাকা: সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্ফাফিজুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে হিসেবে সর্বাধিক সুবিধা নিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হলে অনেক সুবিধাই হারাতে হবে।

রপ্তানি খাতে প্রায় ৯০ শতাংশ সুবিধা বাংলাদেশের জন্য থাকবে না।

রোববার (২০ নভেম্বর)  স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে উত্তরণ পরবর্তী করণীয় নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ সংলাপ হয়। সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ ( সিপিডি)। এতে সহায়তা করে ফেডরিক এভার্ট স্টিফটাং (এফইএস)। সংলাপে রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও আমলারা বক্তব্য দেন।

সংলাপের প্রধান অতিথি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন বলেন, এলডিসি উত্তরণ হলে রপ্তানি খাতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছে, মন্দার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ডব্লিউটিওতে দর-কষাকষি বা আলোচনা করে বাজারসুবিধা পাওয়া যাবে, আমি একটু দুর্বল বলে সব সুবিধা পাব, কিন্তু আমি কিছু দেব না—এটা বেশ পুরোনো ধাঁচের বাণিজ্য আলোচনা, এর জন্য ডব্লিউটিও সৃষ্টি হয়নি।

তিনি বলেন, পশ্চাৎপদ চিন্তা বাদ দিয়ে ভবিষ্যৎমুখী চিন্তা করতে হবে। রাজনীতিবিদ ও পেশাদারদের ভাষ্যের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে। এ বিষয়ে একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ডব্লিউটিওর এক সভায় মন্ত্রী বলেছেন, আমরা অনেক অর্থনৈতিক উন্নতি করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হয়ে যাব। আবার যারা কারিগরি বিষয়ে দর-কষাকষি করেন, তারা একই সভায় বলছেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও বাজারসুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে। তখন বিদেশিরা আমাকে বলেন, তোমাদের কোনটি ঠিক?

অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দাবিগুলো ডব্লিউটিও- এমসি১২-এ উপেক্ষিত হয়েছে। সম্মেলনে উন্নত ও ধনী দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধান এজেন্ডা এলডিসি গ্রাজুয়েট। এর আগে গ্রাজুয়েশন পাওয়া ছয়টি দেশের বেশিরভাগই ছোট অর্থনীতির। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যারা সর্বাধিক সুবিধা নিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু এলডিসি উত্তরণের পর অনেক সুবিধাই হারাতে হবে।

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ, তা ধরেই ভবিষ্যৎ সব পরিকল্পনা করতে হবে। এলডিসি উত্তরণের পর দ্বিপক্ষীয় আঞ্চলিক বাণিজ্যসুবিধা পাওয়ায় বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশে বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছেন না।

সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান, ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ও বাণিজ্যবিশেষজ্ঞ মোস্তফা আবিদ খান প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১ , ২০২২
জেডএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।