ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে শিপইয়ার্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে শিপইয়ার্ড

ঢাকা: পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দরের কাছে একটি আন্তর্জাতিক মানের জাহাজ নির্মাণ কারখানা (শিপইয়ার্ড) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য যৌথভাবে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ করতে আগ্রহী সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেন্টিয়াম সলিউশনস এবং ডাচ প্রতিষ্ঠান ডামেন শিপইয়ার্ড গ্রুপ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশে এটিই হবে সর্বোচ্চ সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে জেন্টিয়াম সলিউশনসের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব মো. কায়কোবাদ হোসেন এবং ডামেন গ্রুপের নেভাল প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন পরিচালক ইফ ভ্যান ডেন ব্রোয়েক ও ডামেন শিপইয়ার্ডের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক রাবিয়েন বাহাদুয়ের এ বিষয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশন (বিএসইসি) এবং জেন্টিয়াম ও ডামেনের মধ্যে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ‘বাংলাদেশের পটুয়াখালী জেলায় একটি বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ মেরামত সুবিধা গড়ে তোলার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই’ এর প্রতিবেদন শিল্পমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন ও হস্তান্তর করা হয়।

সাক্ষাৎকালে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার ‘জাহাজ ক্রেতা জাতি’ থেকে ‘জাহাজ নির্মাণকারী জাতি’ হতে চায়। প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর এলাকায় জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজ মেরামত শিল্প গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি চূড়ান্ত হলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয় বা বিএসইসি পায়রা বন্দর সংলগ্ন এলাকায় জমির সংস্থান করবে এবং বিশ্বমানের জাহাজ নির্মাণ কারখানা স্থাপনে সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

সাক্ষাৎকালে বিনিয়োগকারীদের পক্ষে প্রতিনিধিরা জানান, জাহাজ নির্মাণ শিল্পে প্রচুর শ্রমিকের দরকার হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রথম পর্যায়ে আঞ্চলিক ও স্থানীয় প্রায় দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। জেন্টিয়াম-ডামেনের মতো বিশেষায়িত কোম্পানির সঙ্গে কাজ করে বাংলোদেশের শ্রমিকরা তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবে। উন্নত বিশ্বের প্রযুক্তি বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হবে। এর মাধ্যমে তারা দেশে ব্যবহারের জন্য এবং দেশের বাইরে রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উচ্চমানের জাহাজ নির্মাণ লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে।

প্রতিনিধিরা আরও বলেন, আমদানি বিকল্প জাহাজ তৈরি করে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশ্বমানের জাহাজ সরবরাহ করবে। সর্বোপরি বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম জাহাজ নির্মাণ করতে বাংলাদেশে নির্ভরযোগ্য ও প্রতিযোগিতামূলক সাপ্লাই চেইন উন্নয়নে তারা ভূমিকা রাখবে।

প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে অন্যান্যের মধ্যে শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, জেন্টিয়ামের সহ-উপদেষ্টা অতিরিক্ত সচিব (অব.) ড. সাইদুর রহমান সেলিম, জেন্টিয়ামের কারিগরি প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফায়েজুল আমীন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের নিকটবর্তী এলাকায় একটি জাহাজ নির্মাণ কারখানা স্থাপন প্রধামন্ত্রী প্রতিশ্রুত একটি প্রকল্প। ২০১৪ সালে পটুয়াখালী সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের ঘোষণা দেন। শিল্প মন্ত্রণালয় এটিকে তাদের অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেন্টিয়াম সলিউশনস এবং ডাচ প্রতিষ্ঠান ডামেন শিপইয়ার্ডস গ্রুপ বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে এলে বিএসইসির সঙ্গে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে কোম্পানি দুটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পায়রা বন্দর সংলগ্ন এলাকায় এ প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রায় ১০১ একর জমির সংস্থান করে রেখেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।