ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নির্বাচনের আগে চালু হচ্ছে না নাকুগাঁও বর্ডার হাট

গৌতম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
নির্বাচনের আগে চালু হচ্ছে না নাকুগাঁও বর্ডার হাট বর্ডার হাট। (ফাইল ফটো)

ঢাকা: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে চালু হচ্ছে না নাকুগাঁও বর্ডার হাট। বাংলাদেশের শেরপুর জেলার নাকুগাঁও ও ভারতের ডালু সীমান্তের বর্ডার হাটটি চলতি বছর চালু হওয়ার কথা ছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে হাটটি চালুর জন্য অপেক্ষা করতে হবে নতুন সরকার ক্ষমতায় বসা পর্যন্ত।

নাকুগাঁও ছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আরও ছয়টি বর্ডার হাট চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এর মধ্যে ত্রিপুরা সীমান্তে চারটি ও পশ্চিমবাংলা সীমান্তে দু’টি হাট চালু সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

বর্তমান সীমান্ত এলাকায় চারটি বর্ডার হাট চালু রয়েছে। এ হাট চালুর মাধ্যমে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের অঙ্গরাজ্য ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য-বিনিয়োগ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাণিজ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

গত সেপ্টেম্বরে ভারতের বাণিজ্য, শিল্প ও বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর বাংলাদেশ সফরের সময়ে এবছরই যে কোনো সময় চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দু’দেশই সীমান্ত হাটকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। যেসব সীমান্তে নতুন হাট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেসব সীমান্ত সংলগ্ন অনেক গ্রামের আশপাশে কোনো হাট বা বাজার নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে যেতে হয় দূরের কোনো গঞ্জ বা শহরে। এ দুর্ভোগের কারণে এসব এলাকার সীমান্তে চোরাচালানের ঘটনাও বেড়েছে। কিন্তু হাট বসানো হলে চোরাচালানের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণের দুর্ভোগ কমবে। এছাড়া দুই সীমান্তের লোকজনের মধ্যে গড়ে উঠবে সুসম্পর্ক।  

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বর্ডার হাটের বিষয়ে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। বর্তমানে চারটি বর্ডার হাট চালু রয়েছে, আরো ছয়টি বর্ডার হাট চালুর বিষয় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশের শেরপুর জেলার নাকুগাঁও এবং ভারতের ডালু সীমান্তে একটি বর্ডারহাট এবছর চালু হওয়ার কথা থাকলেও নির্বাচনের কারণে তা হচ্ছে না। নতুন সরকার এ হাট চালু করবে।

‘সব ধরনের বাণিজ্য বাধা দূর করতে ভারত ও বাংলাদেশ একমত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধা তুলে ধরা হয়। পাটজাত পণ্য, খাদ্যপণ্য, ভোজ্যতেলসহ বাংলাদেশের বেশকিছু পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমস্যাগুলো সমাধান করার বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়েছে। ’

বাণিজ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সীমান্ত এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চারটি বর্ডার হাট চালু রয়েছে। ২০১১ সালের ১৬ জুলাই কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা সদর থেকে সাড়ে চার কিলোমিটার দূরে ভারতের কালাইরচর সীমান্তের বিপরীতে বাংলাদেশের বালিয়ামারী সীমান্তে সোনাভরি নদের তীরে প্রথম সীমান্ত হাট চালু করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে হাটের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে এ বছর নতুন আরও ছয়টি বর্ডার হাট চালু করার ব্যাপারে দু’দেশই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে প্রথম থেকে কাজ শুরু করে।  

এরই ধারাবাহিকতায় এবার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমাঘাট, জুড়ি উপজেলার পশ্চিম বিটুলি, সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সায়দাবাদ, দুয়ারাবাজারের বাগানবাড়ি ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ভূঁইয়াপাড়ায় বর্ডার হাট চালুর কার্যক্রম চলছে। এছাড়া বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারি, সুনামগঞ্জের ডলুরা, ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার তারাপুরে বর্ডার হাট চালু রয়েছে।

সংশোধিত সমঝোতা অনুযায়ী এখন থেকে সীমান্ত হাটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সকল পণ্য, শাড়ি, হস্তশিল্পজাত পণ্য ও স্টেশনারি বিক্রি করা যাবে। এতে সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে যাবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া উভয় দেশের ক্রেতা বিক্রেতার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে ২৫ থেকে ৫০ জনে। ক্রয়সীমা করা হয়েছে ২শ ডলার। যা আগে ছিল ১শ ডলার। দু’দেশের মানুষের শুল্কমুক্তভাবে পণ্য কেনাবেচা সহজলভ্য করতেই এ উদ্যোগ।  
  
২০১৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর সীমান্তে নতুন হাট স্থাপনের বিষয়ে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা। এর আগে বর্ডার হাট সংক্রান্ত সমঝোতার মেয়াদ শেষ হওয়ায় কিছু সংশোধনী প্রস্তাবসহ নতুন খসড়া ২০১৫ সালের অক্টোবরে ভারতের কাছে পৌঁছে দেয় বাংলাদেশ।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
জিসিজি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।