ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রুপির বিপরীতে ‘শক্তিশালী’ টাকা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৮
রুপির বিপরীতে ‘শক্তিশালী’ টাকা

ঢাকা: চলতি বছরের অক্টোবরের শুরুর দিকেও ভারতীয় মুদ্রা ১০০ রুপি কিনতে ব্যয় হতো ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। বর্তমানে ১০০ রুপি কিনতে লাগছে মাত্র ১১০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে রুপির বিপরীতে টাকার মান বেড়েছে ১২ শতাংশ।

রুপির বিপরীতে টাকার মান বাড়ানোর জন্য ডলারের বিপরীতে রুপির পতন দায়ী বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
 
রুপির বিপরীতে টাকার মান বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে পণ্য আমদানির খরচ কমছে।

ভারত থেকে ২০ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে বর্তমানে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। একমাস আগেও এই পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের গুনতে হতো চার লাখ টাকা।
 
তবে এই সুযোগে ভারতীয় পণ্যে বাজার সয়লাব হলে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন দেশীয় ব্যবসায়ীরা। বিনিময় মূল্যের এই অবস্থা রপ্তানি খাতকে নতুন করে প্রতিযোগিতার ‍মুখে ফেলবে।
 
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দর এক্সপোর্ট ইমপোর্ট গ্রুপের সভাপতি হারুন অর রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশি টাকার তুলনায় ভারতীয় রুপির মান কমে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা প্রায় ৫০ হাজার টাকা কমে ২০ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবেন।  

তিনি বলেন, আগে ভারত থেকে যে পণ্যটি ২০ টাকায় কিনতে হতো, ভারতীয় রুপির মান কমে যাওয়ায় সেটি এখন ১৮ টাকায় কেনা যাচ্ছে।
 
সংশ্লিষ্টদের হিসাব মতে, বর্তমানে ১০০ ভারতীয় রুপি কিনতে খরচ হচ্ছে ১১০ টাকা। রুপির বিপরীতে টাকার এই শক্তিশালী অবস্থানের কারণ ডলারের সঙ্গে রুপির মান পতন।  
 
গেলো এক বছরে ডলারের বিপরীতে রুপির দর কমেছে সাড়ে ১৩ শতাংশ। আর টাকার দর কমেছে মাত্র ১ শতাংশ। যা বড় সুবিধা এনে দিয়েছে আমদানি বাণিজ্যে। কেননা বছরে প্রায় ৮০০ কোটি  ডলারের পণ্য আসে ভারত থেকে।
 
তবে রুপির বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক মনে করছেন না বিশেজ্ঞরা। যোগাযোগ করা হলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, টাকার বিপরীতে রুপির দর কমে যাওয়ায় অতিরিক্ত আমদানির প্রবণতা বাড়তে পারে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।  

‘বাজারের বাড়তি সুবিধা নেওয়ার জন্য মজুদ করে রাখার অভ্যাস তৈরি হতে পারে। এটি হলে অভ্যন্তরীণ পণ্য উৎপাদনকারীরা লোকসানে পড়বেন। ’
 
পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ শুধু ভারতে থেকে আমদানিই করে না, রফতানিও করে। দেশটিতে গত একবছরে তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে ১২৫ শতাংশ। সিমেন্ট থেকে শুরু করে খাদ্য পণ্যের বাজারও দখল করছে বাংলাদেশ। যদিও পরিমাণে তা সামান্য। প্রতিবছর রফতানি হয় মাত্র ৯০ কোটি ডলারের খাদ্য পণ্য।
 
এর বাইরেও গত একবছরে ২০ লাখ বাংলাদেশি ভারত ভ্রমণ করেছেন। টাকার বিপরীতে রুপির এই পতন ভ্রমণকে সাশ্রয়ী করেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশিরা।  
 
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ডলারের বিপরীতে রুপির মান যে হারে কমেছে, সে হারে টাকার মান কমেনি। যে কারণে টাকার বিপরীতে রুপির মানের পতন হয়েছে। এটি টাকার জন্য ভালো।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ঘণ্টা, নভেম্বর: ৫, ২০১৮
এসই/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।