ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সবজির বাজারে লাগাম টানার সম্ভাবনা!

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৮
সবজির বাজারে লাগাম টানার সম্ভাবনা! যাত্রাবাড়ী সবজির বাজার/ ছবি: শাকিল

ঢাকা: শীত শেষ হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফায় নানান অজুহাতে সবজির দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। প্রতি বছরের মতো ক্রেতারা শীতে সবজির মূল্য কিছুটা কম প্রত্যাশা করলেও বাজারে এবার তা দেখা যায়নি। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এবার শীতে বাড়তি মূল্যে বিক্রি হয়েছে সবজি।

তবে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে সবজির বাজার স্থিতিশীল হবে বলে আশার বাণী শুনিয়েছেন বিক্রেতারা। যদিও বিক্রেতাদের এমন আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে পারছেন না ক্রেতারা।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সবজি আড়ত ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। যদিও যাত্রাবাড়ী সবজি আড়তে রাজধানীর অন্য যেকোনো বাজারের তুলনায় কিছুটা কম দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

যাত্রাবাড়ী আড়তে প্রতি কেজি বেগুন রাজধানীর অন্য বাজারের তুলনায় ২০ টাকা কমে ৪০ টাকা করে, সিম ২০-১০ টাকা কমে ৩০-৫০ টাকা, পেঁপে ৫-১০ টাকা কমে ১৫-২০ টাকা, আলো ৩-৪ টাকা কমে ১৬-২২ টাকা, মূলা ৫ টাকা কমে ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা, ধনিয়াপাতা ১০ টাকা কমে ৭০ টাকা, গাজর ১০ টাকা কমে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ী সবজির বাজার/ ছবি: শাকিলএছাড়া রাজধানীর অন্যসব বাজারের মতো দামেই প্রতি কেজি টমেটো ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, শালগম ২৫ টাকা, প্রতি আটি পেঁয়াজ পাতা ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি পিস বাঁধাকপি ২০-২৫ টাকা, ফুল কপি ২৫ টাকা, প্রতি আঁটি কলমি শাক ৫ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ও ডাটা শাক দুই আটি ১৩ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, যাত্রাবাড়ীর বিশাল সবজি আড়তে একসঙ্গে চলছে পাইকারি ও খুচরা সবজি বিক্রি। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা পাইকারি ও খুচরা দামে সবজি কিনতে এসেছেন আড়তে।

আড়তের খুচরা সবজি বিক্রেতা নেছার উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেশি চলছে। তবে ঠাণ্ডা কিছুটা কমে যাওয়ায় সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে। ট্রাকে ট্রাকে সবজি রাজধানীতে প্রবেশ করছে। আজ কয়েকটি সবজির দামও কমেছে। আশা করা যায় আগামী সপ্তাহে সবজির বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে।

তবে বিক্রেতাদের এমন আশ্বাস ভরসা রাখছেন না ক্রেতারা। রাজধানীর জুরাইন থেকে আসা ক্রেতা মো. শফিক বাংলানিউজকে বলেন, এখানে এসেছিলাম কিছু কম দামে সবজি কিনতে। কিন্তু এখানেও দাম তেমন একটা কম না, বিক্রেতারা বেশি দামেই বিক্রি করছেন। তারা দাম কমার কথা বলে বেশি দামেই বিক্রি করছেন।

যাত্রাবাড়ী সবজি আড়তের একটু পেছনে গেলেই ‘খান’ মাছের পাইকারি ও খুচরা বাজারে ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৪০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই ২৫০ টাকা, পাঙ্গাস মাছ ১০০ টাকা, কার্প ১৪০ টাকা, কাতল মাছ ২৫০ টাকা, মেনি মাছ ৩২০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ১৪০ টাকা ও চিংড়িমাছ ৪৫০-৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে যাত্রাবাড়ীর সবজি আড়তের পাশে পেঁয়াজ বাজারে পিঁয়াজের খুচরা মূল্যও রাজধানীর অন্য যেকোনো বাজারের তুলনায় কম দেখা গেছে। প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা ও আমদানি করা পিঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

এছাড়া প্রতিকেজি দেশি রসুন ৭০ টাকা, আমদানি করা রসুন ৮০ টাকা, দেশি আদা ৬০ টাকা ও আমদানি করা আদা ৮০ টাকা, চিনি ৫৫-৬০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও আমদানি করা মসুর ডাল ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের পিঁয়াজ বিক্রেতা মিজান বাংলানিউজকে বলেন, দেশি পিঁয়াজের চাপ বাজারে বেড়েছে, তাই তর তর করে দাম কমছে। আশা করা যায় আগামী সপ্তাহে এসেও পিঁয়াজের দাম আরও কমবে।

এদিকে চালের বাজারের অস্থিরতা যাত্রাবাড়ীতেও বিরাজমান। চালের সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, কেজি প্রতি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকা, মিনিকেট ৬০-৬২ টাকা, বিআর-২৮ ৫২ টাকা, পারিজা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪০০-৪৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কক মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২২০ টাকা দরে পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, জনুয়ারি ১৯, ২০১৮
এমএসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।