ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আলোর মুখ দেখেনি বিকল্প ইট, প্রকল্প অগ্রগতি ১২ শতাংশ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
আলোর মুখ দেখেনি বিকল্প ইট, প্রকল্প অগ্রগতি ১২ শতাংশ ফাইল ফটো

ঢাকা: মাটি ও সিমেন্টের মিশ্রণে আগুনের স্পর্শ ছাড়াই তৈরি হবে ইট। এতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হবে নদীর খননকৃত মাটি।

এই ইটের নাম দেওয়া হয়েছে বিকল্প ইট। তবে এখনও আলোর মুখ দেখেনি এই প্রকল্প। বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। কবে নাগাদ বিকল্প ইট আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বিকল্প ইট তৈরির জন্য আরও এক বছর সময় দাবি করেছেন।
 
হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এইচবিআরআই) সূত্রে জানা গেছে, ‘ইটের বিকল্প উদ্ভাবন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় বছরখানেক আগে। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল, জুলাই ২০১৪ থেকে ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়, ১ কোটি ৯৫ লাখ ৮ হাজার টাকা। কিন্তু খরচ হয়েছে মাত্র ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এতে করে বিকল্প ইট তৈরির বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। প্রকল্পের সময় ডিসেম্বর ২০১৬ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বিকল্প ইট দিয়ে তিনটি মডেল হাউজ তৈরি করার কথা থাকলেও, এখনও তা সম্পন্ন হয়নি।
 
প্রতিষ্ঠানটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, স্টাডি প্রকল্পের আওতায় ইটের বিকল্প বিভিন্ন নির্মাণ উপকরণ তৈরির জন্য দেশের নদী খননকৃত বিভিন্ন মাটি সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং নমুনা তৈরি করা হচ্ছে। নমুনাগুলোর গুণগতমান ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা সময়সাপেক্ষ বিষয়। এছাড়া ইটের বিকল্প বিভিন্ন মালামাল দিয়ে তিনটি মডেল হাউজ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক উপকরণ তৈরির লক্ষ্যে মেশিনারিজ ক্রয় ও কাঁচামাল সংগ্রহপূর্বক প্লান্ট তৈরির বিষয়টিও সময়সাপেক্ষ। এ কারণে বেঁধে দেওয়া সময়ে বিকল্প ইট তৈরি করা যায়নি। এ পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ১২ শতাংশ।
 
এইচবিআরআই সূত্র জানায়, প্রচলিত ইটের বিকল্প তৈরি, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব উপকরণ উদ্ভাবন, উন্নয়ন এবং ড্রেজিং সয়েলের বিকল্প ব্যবহার উদ্ভাবন করাই এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য। ড্রেজিং সয়েলের সঙ্গে অন্যান্য উপকরণ মিশ্রণ করে বিকল্প ইটের কাঁচামাল তৈরি হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার মাটি ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হওয়ায় এ ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ফর্মুলা প্রযোজ্য হবে না। এ কারণে বিকল্প ইট তৈরির জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। প্রকল্পটির মাধ্যমে দেশীয় বিভিন্ন উপকরণের সমন্বয়ে একটি টেকসই ইটের বিকল্প প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা জরুরি।
 
প্রকল্প থেকে বাদ স্টাডি ট্যুরের ২৪ লাখ টাকা:
প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের গ্রামীণ এলাকায় সহজে স্থানান্তরযোগ্য বাসগৃহ নির্মাণ করা সহজ হবে। সিমেন্ট শিটের ঘরের পরিবর্তে ফেরোসিমেন্টের ঘর তৈরিতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ ও আকৃষ্ট করা সহজ হবে। প্রকল্প প্রণয়নের সময় মেশিনারিজ ইক্যুইপমেন্টের মধ্যে টেস্টিং মেশিন অন্তর্ভুক্ত ছিল না। টেস্টিং মেশিন বাবদ ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া নির্মাণ কাজের জন্য বর্তমান বাজারদর বিবেচনায় ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
 
অন্যদিকে কিছু ব্যয় হ্রাস পেয়েছে। সার্বিকভাবে ব্যয় বেড়েছে ১৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রকল্প থেকে স্টাডি ট্যুরের ২৪ লাখ টাকা বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে করে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
 
এইচবিআরআই-এর সিনিয়র রিসার্চার আকতার হোসেন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিকল্প ইট তৈরির কাজ এখনও হয়নি। এটা একটা সৃজনশীল কাজ, আমাদের আরও একটু সময় লাগবে। আরও গবেষণা ও কিছু মেশিনারিজ কেনার জন্য ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে।

বিকল্প ইট ব্যবহার করে মডেল হাউজ তৈরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিকল্প ইট দিয়ে তিনটি মডেল হাউজ এখনও নির্মাণ করা হয়নি। তবে বর্ধিত সময়ের মধ্যে আমাদের ক্যাম্পাসে তিনটি মডেল হাউজ তৈরি করতে পারবো।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
এমআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।