ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রায় ২ যুগ পর চালু হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানা

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৩
প্রায় ২ যুগ পর চালু হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানা

ঠাকুরগাঁও: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রায় দুই যুগ পর চালু হতে যাচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ের রেশম কারখানাটি।  

কারখানাটি চালু হওয়ার মাধ্যমে রেশমশিল্পে সুদিন ফিরবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

কারখানাটির চলতি মূলধন না থাকায় কারখানা পরিচালনার যাবতীয় অর্থ বোর্ডের উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।

১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ১৬৩.৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বিএমআরই প্রকল্পের অধীনে কারখানাটির ভবন বর্ধিত করা ও অতিরিক্ত ২০টি শক্তিচালিত তাঁতসহ কিছু যন্ত্রপাতি সংস্থাপিত হয়। কিন্তু আবর্তক ( চলমান বা চলতি খরচ) তহবিলের অভাবসহ নানাবিধ কারণে কারখানাটি পরিচালনা সম্ভব হয়নি।

২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্মরত ৮৬ জন কর্মীকে গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের মাধ্যমে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১০ মাস শ্রমিকদের মজুরি দেওয়াও সম্ভব হয়নি। ওই পর্যায়ে সরকারি সিদ্ধান্তে কারখানাটি বন্ধ হয়।

রেশম বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস স্থানীয় বেকার নারী-পুরুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে ঠাকুরগাঁও শহরের গোবিন্দনগর এলাকায় ৩ দশমিক ৩৪ একর জমির ওপর রেশম কারখানাটি স্থাপন করে। পরে ১৯৮১ সালের ৩০ জুন সরকারি সিদ্ধান্তে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি রেশম বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কারখানাটিতে ২০টি রিলিং বেসিন, ৩টি শক্তিচালিত তাঁত, ১৯টি হস্তচালিত তাঁত ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি বসানো ছিল।

রংপুর অঞ্চলের উৎপাদন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাঁচ বছরের জন্য সুপ্রিয় এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে কারখানাটি দেওয়া হয়েছে। তারা শুধু ভবন এবং যন্ত্রগুলো ব্যবহার করতে পারবে।

ঠাকুরগাও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, রেশম কারখানার কর্মকতারা এসেছিলেন, তারা আমাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। কারখানা চালু হলে জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। রেশমের সুদিন ফিরে আসবে এ কারখানার মাধ্যমে।

কারখানাটিতে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন আলেয়া বেগম। তিনি বলেন, আমি প্রায় ২৪ বছর চাকরি করেছি এ রেশম কারখানায়, আমার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। ২০০২ সালে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়, তারপর থেকে আমি বেকার। এ কারখানাটি চালু হলে আমিও কাজ ফিরে পাব।

এ বিষয়ে রেশন শ্রমিক সাইদুর রহমান বাবু বলেন, বিভিন্ন আন্দোলন করে ১৯৮১ সালে কারখানাটি জাতীয়করণ করাই আমরা। মাঝে একটু অনিয়মের কারণে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়, পরে সরকার আবার জাতীয়করণ করলেও ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবারও নতুন করে চালু হবে শুনে আমরা সবাই আনন্দিত।

সুপ্রিয় এন্টারপ্রাইজের জিএম মেহেদী হাসান বলেন, গত মে মাসে আমরা এ রেশম কারখানাটি লিজ নিয়েছি। এ মাসের মধ্যেই কারখানাটি আমরা চালু করতে পারব বলে আশা করি। কারখানাটি চালু হলে স্থানীয় অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।