ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

এবার অখিলের নামে দিল্লিতে এফআইআর করলেন বিজেপি নেত্রী লকেট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
এবার অখিলের নামে দিল্লিতে এফআইআর করলেন বিজেপি নেত্রী লকেট

কলকাতা: ভারতের রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করে অস্বস্তি বেড়েই চলেছে পশ্চিমবঙ্গের কারা দফতরের প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরির। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক।

তার বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির নর্থ অ্যাভিনিউ থানায় এফআইআর করেছেন হুগলি জেলার বিজেপি সংসদ সদস্য লকেট চট্টোপাধ্যায়।

অখিল গিরি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে অপমানের মধ্য দিয়ে গোটা আদিবাসী সমাজের নারীদের অপমান করেছেন বলে মনে করেন, হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। ‘সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর অখিল গিরি’এই মর্মে রোববার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর সংশ্লিষ্ট থানায় অখিল গিরির নামে এফআইআর করেছেন লকেট।
 
বিজেপি নেত্রী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার আদিবাসীদের নিয়ে নানা কথা বললেও আদতে তাঁদের উপেক্ষার চোখে দেখে শাসকদল। মমতার আমলে বাংলার আদিবাসী সমাজের কোনও উন্নয়ন হয়নি বলেই মনে করেন হুগলির বিজেপি সাংসদ।

শুক্রবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেন অখিল। অখিলের ওই সভার একটি ভিডিয়ো ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে। ফুটেজে দেখা গেছে, তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও ওই সভায় হাজির রয়েছেন। তার সামনেই রাজ্যের মৎসমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু, তোমার রাষ্ট্রপতিকে কেমন দেখতে বাবা?

ওই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করে নয়াদিল্লির নর্থ অ্যাভিনিউ থানায় অখিল গিরির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন লকেট। একইভাবে তৃণমূল সরকারকে ‘আদিবাসী বিরোধী’ তকমা দিতে শুরু করে বিজেপি। অখিল গিরির বিধায়ক পদ খারিজের দাবি তুলেছে তারা। থানায় এফআইআর থেকে প্রতিবাদ মিটিং, মিছিলও করেছেন তারা।

‘তৃণমূল আদিবাসীর জাতির প্রতি আদপে শ্রদ্ধাশীল নয় বলে, ক্ষোভ জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আদিবাসী বিরোধী। বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি সেলের প্রধান অমিত মাল্যব টুইটারে ওই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়েই জনজাতি বিরোধী। তাই তো তিনি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করেননি।

ঘরে বাইরে প্রবল চাপে পড়ে শেষমেশ নিজের বক্তব্যে অনুতাপ প্রকাশ করেছেন অখিল গিরি। নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূকে চিঠি দেবেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এতেও অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি। অখিল গিরির বিরুদ্ধে জাতীয় নারী কমিশনে নালিশ জানান বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। চিঠিতে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য অখিল গিরির বিধায়ক পদ খারিজ, তাকে গ্রেফতার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

এরপরেই নড়েচড়ে বসে জাতীয় নারী কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজিকে চিঠি লিখে অখিল গিরির বিরিদ্ধে আইনুনাগ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়। এরই পাশাপাশি অখিল গিরিকেও তাঁর মন্তব্যের জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মহিলা কমিশন।

তবে গতকাল অখিল বলেছিলেন, ‘দাঁত ফোকলা মন্ত্রী’, ‘কাকের মতো দেখতে’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন শুভেন্দু। সেই রাগ সামলাতে না পেরে দলীয়কর্মী বৈঠকে মুখ থেকে বের হয়ে গেছে। আমি বয়স্ক মানুষ। আমার মনে ক্রোধ জন্মেছিল। রাষ্ট্রপতি মহোদয়াকে আমি কোনও অসম্মান করতে চাইনি। তাঁর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে। যে কথা আমার মুখ থেকে বেরিয়েছে, তা ক্রোধের বশে বেরিয়ে এসেছে। আমি অনুতপ্ত।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
ভিএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।