ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ঈদের ফ্যাশনে কলকাতা মাতাচ্ছে মুজিব, জহর, মোদি কোট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৫
ঈদের ফ্যাশনে কলকাতা মাতাচ্ছে মুজিব, জহর, মোদি কোট

কলকাতা: ট্রায়াল রুম থেকে বেড়িয়েই একটা সেলফি। সঙ্গে সঙ্গে সেটা আপলোড হয়ে গেল ফেসবুকের প্রোফাইলে, চলে গেল হোয়টস অ্যাপের তথ্য জালিকায়।

কেনার আগে বন্ধুদের মতামতটা জরুরি। কেউ বলছেন মুজিব কোট, কেউ বলছেন জহর কোট আবার কেউ বলছেন মোদি কোট। নাম যাই হোক কলকাতার ঈদের বাজারে এখন এই  কোটের চাহিদা এখন তুঙ্গে।

হাতা বিহীন এই কোট পড়তেন রাজনীতিবিদরা। এই কোটে অভ্যস্ত ছিলেন জহর লাল নেহেরু, বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান। এই কোটকে আবার সামনে এনেছেন নরেন্দ্র মোদি। কিছু দিন ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ফ্যাশন আমজনতার ফ্যাশন হয়ে উঠছে।

গতবার ঈদ এবং শারদ উৎসবের আগে কলকাতা ছেয়ে গিয়েছিল মোদির হাফ হাতা পাঞ্জাবিতে। এবার ফ্যাশনে কোট।

গম্ভীর রাজনৈতিক নেতাদের কোট কি ভাবে হয়ে উঠলো তরুণদের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট? এই মুজিব কোট বা জহর কোট একটু বেশি বয়সীদের জন্য নয় কি? কলকাতার এক শপিং মলের বিক্রেতা জানালেন ৮০ শতাংশ কোট বিক্রি করেছেন তিরিশ বছর বয়সের মধ্যের মানুষকে। তাই কোটের ফ্যাশনে এবার মেতেছে তরুণ প্রজন্ম একথা বলাই যায়।

কিন্তু এতদিনের ‘ট্রেন্ড’ সিনেমার অভিনেতাদের ছেড়ে হঠাৎ করে রাজনীতিবিদদের পোশাক কেন ফ্যাশনের দুনিয়ায়? এই প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলেও ফেসবুকের প্রোফাইলে আসা কমেন্ট দেখে একটি নয় একেবারে তিনটি কোট কিনে নিলেন সেই কলেজ পড়ুয়া তরুণ।

কোটের দাম তিন থেকে পাঁচ হাজার রুপি। সাত হাজার রুপির কোটও বিস্তর বিক্রি হচ্ছে কলকাতার শপিং মলগুলিতে। ধর্মতলার ফুটপাতে আবার হাজার রুপির মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে এই ধরনের কোট। অবশ্যই তার মানের মধ্যে ফারাক আছে।

কেউ কেউ আবার দরজির কাছে মাপ দিয়ে বানাচ্ছেন এই কোট বা জ্যাকেট। সেক্ষেত্রে দাম পড়েছে কিছুটা বেশি। তবে শুধু ছেলেরাই নয়। এই জ্যাকেট পাল্লা দিয়ে কিনছেন মেয়েরাও। এই রকমই এক কলেজ ছাত্রী জানালেন, শাড়ি, ধুতি এই ধরনের কিছু পোশাক বাদ দিলে ছেলে আর মেয়েদের পোশাকের ফারাকটা মুছে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আর জামা, পাঞ্জাবি বা কুর্তির সঙ্গে মানিয়ে যায় এই কোট তাই যেকোনো সময়ে একটা ‘স্মার্ট লুক’ পেতে এই কোটের জুড়ি মেলা ভার।

তবে ঈদের বাজারে এই কোট সম্পর্কে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য পাওয়া গেল নিউমার্কেটে দাঁড়িয়ে। পোশাক কিনতে আসা এক ফ্যাশন ডিজাইনের ছাত্রী জানালেন, রাজনীতিবিদরা নয়, স্যুট যেমন ইউরোপ এবং আমেরিকার ফর্মাল পোশাক তেমনি ভারতীয় উপমহাদেশের ফর্মাল পোশাক এই কোট। ধুতি পাঞ্জাবি থেকে কুর্তা পায়জামা সবকিছুর সঙ্গে পরা যায়।

তবে কি একেই বলে শিকড়ে ফিরে আশা! হয়তো তাই। তবে ফ্যাশন ডিজাইনের ছাত্রীটির কল্পনা আরও বেশি প্রশস্ত। তিনি জানালেন, হয়তো আগামী দিনে চুড়িদার পাঞ্জাবির সঙ্গে এই কোট হয়ে উঠতে পারে ভারতীয় উপমহাদেশীয় কর্পোরেটদের ফর্মাল পোশাক। হয়তো তার কল্পনাই এক দিন বাস্তব হবে। কর্পোরেট দুনিয়াকে নতুন পোশাক দেবে ভারতীয় উপমহাদেশীয় কোন ফ্যাশন। হতেই পারে সেটা চুড়িদার পাঞ্জাবির সাথে মুজিব কোট। সাহস করে 'স্যুট' এর বদলে দেশীয় ফ্যশানের চেষ্টা করে দেখতে পারেন এই উপমহাদেশের কর্পোরেট বসেরা।

তবে ঈদের ফ্যাশানে যে এই কোট প্রথম সারিতে সে কথা বলাই বাহুল্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।