ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কক্সবাজারে ভিজিডি কার্ড পাচ্ছেন ১৭ হাজার নারী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
কক্সবাজারে ভিজিডি কার্ড পাচ্ছেন ১৭ হাজার নারী

কক্সবাজার: কক্সবাজারে দুস্থ নারীদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি) কার্ডে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ১৭ হাজার ২৬৪ জন নারী।

২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা ২৪ মাস এসব নারীদের প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে খাদ্যশস্য সহায়তা দেওয়া হবে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ভিজিডি চক্রে অন্তর্ভুক্তিতে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, অতি দরিদ্র মহিলাদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি সুরক্ষার আলোকে স্থায়ীভাবে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী করার জন্য ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি) উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এক্ষেত্রে চরম দুর্দশাগ্রস্ত, অতিদরিদ্র, স্বামী পরিত্যাক্তা নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়।

তবে এক্ষেত্রে নারীর বয়স ১৮-৫০ বছরের মধ্যে এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে। এসব নারীরা ২৪ মাসব্যাপী খাদ্যশস্য সহায়তা পাবেন।

সম্প্রতি স্বামী পরিত্যাক্তা, বিধবা নারীদের ভিজিডি তালিকায় স্থান করাতে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ৭১টি ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় ৬০ জন চেয়ারম্যান, প্যানেল চেয়ারম্যান ও সচিব উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন ভিজিডি উপকারভোগী বাছাই প্রক্রিয়া সুষ্ঠ, স্বচ্ছ ও নির্ভুলভাবে সম্পাদন করতে উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রায় উপজেলায় তালিকা হয়ে গেছে। আগামী জানুয়ারি থেকে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হবে।

এরমধ্যে চকরিয়ায় ১৪৪৬ জন, সদর উপজেলায় ১৩৯১ জন, কুতুবদিয়ায় ১৭৬১ জন, মহেশখালীতে ২৪৪৮ জন, পেকুয়ায় ১৩৯৬ জন, রামুতে ২৪৩৭ জন, টেকনাফে ৩ হাজার ৪৬১ ও উখিয়ায় ২৯২৪ জন নারীকে জনপ্রতি একটি করে উপকারভোগীর কার্ড দেওয়া হচ্ছে।   এরমধ্যে উখিয়া-টেকনাফে উপকারভোগীর সংখ্যা বেশি।

সূত্রমতে, উপজেলায় ভিজিডি মহিলা উপকারভোগীর সংখ্যা প্রাপ্তির পর উপজেলা কমিটি অবহিতকরণ সভা করেন এবং দারিদ্র্য চিহ্নিতকরণ ম্যাপ অনুযায়ী ইউনিয়নে সুবিধাভোগীর সংখ্যা নির্ধারণ করেন।

ইউনিয়ন ভিজিডি মহিলা বাছাই কমিটি প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য চার সদস্যবিশিষ্ট পৃথক পৃথক ক্ষুদ্রদল গঠন করেন। ক্ষুদ্র দলের সদস্যরা প্রাথমিক আবেদন ফরম অনুযায়ী সম্ভাব্য মহিলাদের বাড়ি পরিদর্শন করে চূড়ান্ত স্বাক্ষরিত তালিকা ইউনিয়নে প্রেরণ করেন।

চূড়ান্ত তালিকা অনুমোদনের ৭ দিনের মধ্যে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত তারিখে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিত থেকে অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী নির্বাচিত ভিজিডি মহিলার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে ভিজিডি কার্ড বিতরণ করেন।

উপজেলা ভিজিডি কমিটি প্রতিটি ইউনিয়নের খাদ্যশস্য বিতরণের পৃথক তারিখ নির্ধারণ করেন। অনুমোদিত তালিকা ও বিতরণকৃত কার্ড অনুযায়ী ২৪ মাসব্যাপী প্রতি মাসে ৩০ কেজি গম/চাল প্রদান করা হয়।

রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. শাহজাহান বলেন, কিছুদিন আগে নতুন তালিকা তৈরির নির্দেশনা পেয়েছি। কয়েকদিনের মধ্যে তালিকা চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেব।

তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে ২২ জনের জন্য বরাদ্দ পেয়েছি। তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে অসহায় ও দুস্থ নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।

সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান বলেন, মাস খানেক আগে ডিসি অফিসে ২০১৭-১৮ সালের তালিকা তৈরির বিষয়ে বৈঠক হয়েছিল।  ওখান থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করি। এখন প্রায় চূড়ান্ত। আগামী সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ তালিকা ইউএনও’র কাছে জমা দেওয়া হবে।   এবার আমার ইউনিয়নে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৬১ জনের।  

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুব্রত বিশ্বাস বলেন, নারীরা সারাদিন পরিশ্রম করে যা আয় করে তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খায়। কিন্তু নারীর আয়ের ওপর নির্ভর এসব পরিবার যদি প্রতিমাসে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য পায় তাহলে ওই নারী তার আয় থেকে কিছু টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন। সঞ্চয় করা সম্ভব না হলেও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

তিনি বলেন, এটি একটি চলমান কর্মসূচি। তবে গতবারের তুলনায় এবার উপকারভোগী বেড়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘন্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬

টিটি/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।