চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদী করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রশাসন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আমীর মুহাম্মদ নসরুল্লাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও চবির সিনেট এবং সিন্ডিকেট সদস্য এসএম ফজলুল হক।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা চারটি বিষয়বস্তুর উপর দলগতভাবে তাদের মতামত প্রদান করেন। আলোচ্যসূচীর মধ্যে ছিলো- চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভূতত্ত্ব বিষয়ক প্রভাব। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় কারিগরি ও প্রকৌশল সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পর্যালোচনা। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ পর্যালোচনা। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতায় শাসন, নীতি বাস্তবায়ন ও জনসচেতনা বিষয়ক পর্যালোচনা।
চবির সিনেট এবং সিন্ডিকেট সদস্য এসএম ফজলুল হক বলেন, জলাবদ্ধতা নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভূমিকা পালন করছে এটা খুবই প্রসংশনীয়। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমে হবে না। এতে প্রত্যেকের জায়গা থেকে যতটুকু অবদান রাখা যায় সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করতে হবে।
চবি উপ-উপাচার্য উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা একটি টেকনিক্যাল সমস্যা। এখানে প্রশাসনিক কাজও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আজ আপনাদের সঙ্গে বসার কারণ হলো সকলের মতের ভিত্তিতে একটি গাইডলাইন তৈরি করা। সকলের পরামর্শের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা দূর করতে আমরা চেষ্টা করবো।
চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, আমরা এই জলাবদ্ধতা মোকাবিলা করতে ভয় পাইনা। পুরো বাংলাদেশের দায়িত্বও যদি আমাদের ওপর অর্পণ করা হয়, আমরা নিতে পারবো। তবে আপনারা যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করেন, আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। বিদেশ থেকে গবেষক আনতে হবে না, আপনারাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও পরিকল্পনা দিতে পারবেন। কারণ আপনারা সরেজমিনে সব দেখছেন। প্রয়োজনে আমরা প্রথমে পরিকল্পনাগুলো ছোটো পরিসরে বাস্তবায়ন করে দেখবো, ছোটো পরিসরে সফল হলে বড় পরিসরেও সেগুলো প্রয়োগ করা যাবে। চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত এবং পরামর্শের ভিত্তিতে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টাকে প্রদান করবো।
মতবিনিময় সভায় চারটি গ্রুপের পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনে বেশকিছু পরামর্শ আসে। যার মধ্যে ছিলো জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা, রাজনীতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা, গবেষণা ও ডাটাবেইজ তৈরির মাধ্যমে সম্ভাব্য বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নির্ণয়ের চেষ্টা করে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ, অপরিকল্পিত নগরায়ণ রোধে কার্যকরী আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা, সংশ্লিষ্ট পর্ষদগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন, বর্জ্য রিসাইকলিং এবং ডাম্পিং পদ্ধতি নবায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শ্রেষ্ঠ কলোনিকে পুরস্কৃত করা, সমাজের সকল শ্রেনিপেশার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে তোলাসহ নানান পরিকল্পনা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৪
এমএ/পিডি/টিসি