ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি গান’ গাওয়া নিয়ে যা জানা গেল

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৪
পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি গান’ গাওয়া নিয়ে যা জানা গেল

চট্টগ্রাম নগরে দুর্গাপূজার একটি মণ্ডপে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘ইসলামি গান’ পরিবেশন নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও শেয়ার দিয়ে বলছেন, জামায়াতপন্থি সংগঠনের কর্মীরা এ কাজটি করেছেন।

যদিও জামায়াত থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। কারও কারও দাবি, যারা গান গেয়েছেন, তাদের সেখানে ডেকে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলের ওই মণ্ডপে ঘটনাটি ঘটে। সেখানে ‘ইসলামি গান’ পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য।  এ নিয়ে মানুষের মাঝ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেকে বিষয়টিকে নেতিবাচকভাবে নিয়েছেন।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম রাতেই ওই পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ঘটনায় জড়িতদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কালচারাল একাডেমির সদস্যরা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মঞ্চে ওঠেন। পূজা অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন তারা। এর মধ্যে একটি ছিল বাউল শাহ্ আবদুল করিমের লেখা বিখ্যাত ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং চৌধুরী আবদুল হালিমের লেখা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’ গান।

দ্বিতীয় গানেরই একটি অংশের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

চট্টগ্রাম নগর পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের অনুমতি নিয়ে ওই গানের দলটি পূজামণ্ডপে এসে গান পরিবেশন করেছে বলে জেনেছি। তবে ওই সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। ’ 

সংগঠনটি জামায়াতের কি না এমন প্রশ্নে হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার জানা নেই। ’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে যান তারা।  

তিনি বলেন, ‘পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সজল বাবু আমাদের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তিনি ফোন করে বলেন, আপনারা একটু আসেন। আপনাদের একটু ফ্লোর (সুযোগ) দেব। কিছু দেশাত্মবোধক গান গাইবেন। সে আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের দলটি দুটি সম্প্রীতির গান করে। কিন্তু এটি নিয়ে একটা পক্ষ প্রচারণা চালিয়ে বলছে, ষড়যন্ত্র করতেই আমরা গান করতে গিয়েছি। আমরাতো জোরপূর্বক কিছুই করিনি। দাওয়াত পেয়েই গিয়েছিলাম। ’  

একাডেমি সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগর (উত্তর) ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, এটি ছাত্রশিবিরের কোনো সংগঠন নয়।

এ বিষয়ে জানতে সজল দত্তের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভিডিও নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।  

এ সময় তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত হোক না কেন, তাদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। এ বিষয়ে রাতের মধ্যেই মামলা নেওয়ার জন্য পুলিশ কমিশনারকে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।