ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা, অলৌকিকভাবে বাঁচলো ছেলে 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা, অলৌকিকভাবে বাঁচলো ছেলে  অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশু জাহিদ

চট্টগ্রাম: দেড় বছরের ছেলে জাহিদকে কোলে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়েছিল মা নাজমা বেগম। মুহূর্তেই শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে মারা গেলো মা।

মরদেহের বিভিন্ন অংশ ট্রেনের চাকায় লেগে থাকায় চালক থামিয়ে দেন ট্রেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন।
আসেন জাহিদের নানা-নানিও। তারা জানান নাজমার কোলে ছেলে ছিল।  

তখন চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন সবাই। ছুটে আসেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল করিমও। প্রায় দুই ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর খবর আসে আশরাফ এক ভদ্রলোক রেললাইনে শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন। পড়িমরি করে সবাই ছোটেন হাসপাতালে। হ্যাঁ সেই শিশুটি জাহিদ। সবার ধারণা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে শিশুটি।  

 ওসি মাজহারুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, গত বুধবার (৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসছিল মহানগর প্রভাতী। মীরসরাই জোরারগঞ্জ ক্রস করার সময় নাজমা বেগম (৩৫) দেড় বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে চলন্ত ট্রেনটির নিচে ঝাঁপ দেন। তিনি জোরারগঞ্জের জয়নগর গ্রামের নুরুল হকের মেয়ে। তার স্বামীর নাম অপু মিয়া, তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। নিখোঁজ শিশুটি আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে গেছে। একজন সহৃদয়বান ব্যক্তি রেললাইনে পড়ে থাকতে দেখে তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছিলেন। বর্তমানে শিশুটিকে আমরা নানা-নানির কোলে তুলে দিয়েছি। তার মাথায় সামান্য আঘাত ছিল। মায়ের মরদেহ ময়নাতদন্ত করে অপমৃত্যুর মামলার পর বাবার কাছে হস্তান্তর করেছি।  

রেলওয়ের শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম স্টেশনের কর্মী মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে নাজমা নামের এক নারী তাঁর শিশু সন্তানসহ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেয়। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি/চট্টগ্রাম) রেললাইনের পাশ থেকে মহিলার মরদেহ উদ্ধার করে। কিন্তু বাচ্চাকে খুঁজে পায়নি। সবার কপালে চিন্তার ভাঁজ! বাচ্চা গেল কোথায়! রেলওয়ে থানার ওসি মাজহারুল ইসলামের টিমসহ স্থানীয় লোকজন আশেপাশের এলাকায় অনেক খুঁজেও যখন বাচ্চার হদিস পায়নি তখন একজন লোক এসে খবর দিলো নিকটস্থ হাসপাতালে একটা বাচ্চাকে ভর্তি করা হয়েছে। ওসি সাহেব তখন সেই লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। ঐ মহান ব্যক্তির নাম আশরাফুল আলম ভূঁইয়া। কিছুক্ষণ পর আশরাফ সাহেব বাচ্চা কোলে নিয়ে আসলেন।

তিনি যা জানালেন তাতে সবাই হতবাক! ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়ার পরে মহিলার দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় কিন্তু মহান রবের রহমতে বাচ্চা দুই রেললাইনের মধ্যবর্তী জায়গায় পড়ে থাকে এবং ট্রেন বাচ্চার ওপর দিয়ে চলে যায়। বাচ্চা সামান্য আহত হয়। আশরাফ সাহেব তখন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।  
 
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।