ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দায়িত্বের বাইরে দায়িত্ববোধে প্রশংসিত তারা

মিনহাজুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৩
দায়িত্বের বাইরে দায়িত্ববোধে প্রশংসিত তারা ...

চট্টগ্রাম: সড়কে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের কাজ করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা। এর বাইরে গিয়ে সড়কপথে বিপদে পড়া মানুষের পাশে থেকে বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছেন তারা।

 

ঘটনাস্থলে ছিনতাইকারী ধরে মোবাইল-ব্যাগ উদ্ধারের ঘটনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ট্রাফিক পুলিশ পরিবারের সদস্যরা। গত ৩১ ডিসেম্বর নগরের কোতোয়ালী থানাধীন ফলমন্ডি এলাকায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান এর দুই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় এক ছিনতাইকারীকে আটক করেছিলেন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ দক্ষিণ বিভাগের সার্জেন্ট সাইফুল ইসলাম পাটোয়ারী।

 

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের বিদেশি দুই শিক্ষার্থী সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। ফলমন্ডি এলাকায় তাদের গতিরোধ করে মোবাইল ছিনতাই করার সময় তারা চিৎকার দেন। তৎক্ষণাৎ চিৎকার শুনে এগিয়ে যাই। ধাওয়া দিয়ে ছিনতাইকারীকে আটক করি।  

গত ২১ ডিসেম্বর নগরের মুরাদপুর মোড়ে এক নারীর কাছ থেকে মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীকে আটক করেছিলেন ট্রাফিক পুলিশ উত্তর বিভাগের ইন্সপেক্টর ইস্রাফিল মজুমদার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তায় দায়িত্ব পালন করার সময় নানা ধরনের ঘটনা ঘটে এবং অভিযোগ পাওয়া যায়। জনগণের নিরাপত্তা বিধান করা আমাদের কাজের অংশ।

গত ১৬ নভেম্বর নগরের ইপিজেড মোড়ে পুলিশ বক্সের সামনে একজন পোশাককর্মী কাজ শেষে বাসায় ফেরার সময় হাত থেকে মোবাইলটি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেয় ছিনতাইকারী। এ সময় পোশাককর্মী চিৎকার করেন। চিৎকার শুনে ইপিজেড মোড়ে কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট জহিরুল ইসলাম ধাওয়া করে ওই ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন। এরপর তার কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেন। তিনি নগর ট্রাফিক পুলিশের বন্দর বিভাগে কর্মরত।  

সার্জেন্ট জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের মূল কাজ যানবাহন নিয়ে। সামনে কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটলে চুপ থাকতে পারি না। মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা কাজগুলো করে থাকি। অনেক সময়ে ছিনতাইকারীদের ছুরি-চাকু থাকে, তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছিনতাইকারীদের আটক করার চেষ্টা করি।

শুধু এ তিনটি ঘটনা নয়, নগরে প্রায়সময় সড়কে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধ দমনে ভূমিকা রাখছেন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা। এর আগে জিইসি মোড়ে  ছিনতাইকারীকে আটকে সাহসিকতার পরিচয় দেওয়ার জন্য টিআই (পাঁচলাইশ) মো. মঞ্জুর হোসেন, এটিএসআই আলমগীর হোসেন ও প্রকাশ দাশকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

সিএমপি’র ট্রাফিক উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জয়নুল আবেদীন বাংলানিউজকে বলেন, মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গেলে ছিনতাইকারীকে আটক করা আমাদের নাগরিক দায়িত্ববোধের মধ্যে পড়ে। কিন্তু ট্রাফিকের রুটিন দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তবে পুলিশের কোনও কর্মকর্তাই আবার দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। বিপদে-আপদে মানুষের সহায়তায় পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসছে। আমরা রাস্তায় থাকি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই।  

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশ সদস্যদের সামনে কোনও অপরাধ সংগঠিত হলে দমনের সর্বাত্মক চেষ্টা করা আমাদের সরকারি দায়িত্ব। যারা সাহসিকতার পরিচয় দিচ্ছেন, তাদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছি, পুরস্কৃত করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৩
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।