ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মোহাম্মদ আমির

স্পোর্টস ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মোহাম্মদ আমির মোহাম্মদ আমির

সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ আমির। খবরটি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

এক মিডিয়া বিজ্ঞপ্তিতে পিসিবি জানায়, বোর্ডকে অবসরের বিষয়ে জানিয়েছেন আমির। পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান বলেন, ‘তার (আমির) কোনো আকাঙ্ক্ষা বা অভিপ্রায় নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার প্রতি এবং তাকে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য বিবেচনা করা উচিৎ হবে না। ’ 

তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিজের অবসরের প্রসঙ্গে আমির বলেন, ‘আমি এখন ক্রিকেট ছাড়ছি কারণ আমি মানসিকভাবে অত্যাচারিত হচ্ছি। আমি মনে করি না, এমন অত্যাচার সহ্য করতে পারবো। যে সময়টায় দলে ছিলাম, সেই ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পযর্ন্ত আমাকে অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। আমাকে অসংখ্যবার বলা হয়েছে, পিসিবি আমার ওপরে অনেক বিনিয়োগ করেছে। আমার ওপর সদয় ছিলেন কেবল এমন দু’জন লোকের কথা বলব: নাজাম শেঠি (সাবেক পিসিবি চেয়ারম্যান) এবং শহীদ আফ্রিদি (পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক)।  

পাকিস্তানের হয়ে আমির ৩৬টি টেস্ট, ৬১টি ওয়ানডে এবং ৫০টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। সব মিলিয়ে ২৫৯টি আন্তর্জাতিক উইকেট নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তাকে দেখা গেছে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের (এলপিএল) উদ্বোধনী সংস্করণে। রানার্স-আপ গল গ্লাডিয়েটর্সের জার্সিতে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছেন আমির। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) জাফনা স্টালিয়ন্সের বিপক্ষে ফাইনাল খেলার পরেরদিনই অবসরের খবর এলো ২৮ বছর বয়সী তারকার।  

আমিরকে পাকিস্তানের জার্সিতে শেষবার দেখা গেছে চলতি বছরের শুরুতে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। বর্তমানে নিউজিল্যান্ড সফরে থাকা মিসবাহ-উল-হকের দলে জায়গা হয়নি তার।  

আমিরের এই সিদ্ধান্ত সাময়িক বা অন্যথায়, তার দুই অংশের ক্যারিয়ারের মতোই ধারণা করা হচ্ছে। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিস্ময়কর প্রতিভা হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ঘরোয়া লিগে ন্যাশনাল ব্যাংকের হয়ে অভিষেক মৌসুমে ৫৫ উইকেট নিয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নেন তিনি। কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে তুলনা হতে থাকে তার।  

২০০৯ সালে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে বল হাতে আমির ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেওয়ার পথে আগুন ঝরানো বোলিং করেন তিনি।  

টেস্ট ক্রিকেটেও শুরুতে বল হাতে ঝলক দেখিয়েছেন আমির। কিন্তু প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও ক্যারিয়ারে ধ্বস নামে যখন তার বিরুদ্ধে স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এই অপরাধে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে পাঁচ বছর জন্য নিষিদ্ধ হন তিনি।  

তবে ২০১৬ সালে ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন আমির। ২০১৭ সালে পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেবারের দুই ফাইনালিস্ট ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে জিতলেও তার দল সেমিফাইনালে যেতে পারেনি। তবে আমির নিজের কাজ করেছিলেন। টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী ছিলেন তিনি।  

ঘটনাচক্রে, সাদা বলের ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়ার জন্য গত বছরের জুলাইয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান আমির। তার এই সিদ্ধান্তকে সমালোচনাকে করেছিলেন পাকিস্তানের তখনকার প্রধান কোচ ওয়াকার ইউনিস।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।