ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

শ্রমজীবীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান মাহমুদউল্লাহ’র

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
শ্রমজীবীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান মাহমুদউল্লাহ’র কথা বলছেন মাহমুদউল্লাহ

ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। এখন পযর্ন্ত দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন আর মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে করোনা নিয়ে সতর্কবার্তা ও নিরাপদে থাকার অনুরোধ জানিয়ে যে যার জায়গা থেকে শ্রমজীবী এবং বেকার হয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানালেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

শনিবার (২৮ মার্চ) নিজের অফিসিয়াল ফেসবুকে এক ভিডিও আপলোড করেন ৩৪ বছর বয়সী তারকা। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সেই ভিডিও বার্তায় মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম।

আশা করি সবাই বাসায় আছেন। নিরাপদে আছেন। সুস্থ আছেন। একটা বিষয় হঠাৎ করে মাথায় এলো, তাই ভাবলাম এই মেসেজটা আপনাদের কাছে দিই। কাল রাতে হঠাৎ মাথায় খেয়াল এলো বিষয়টা। অনেকে হয়তো এভাবেও চিন্তা করছি, এই কয়েকদিন আমরা বাসায় বসে আছি, বাসার নিত্য-প্রয়োজনীয় কাজগুলো করছি। গাছে পানি দিচ্ছি, বই পড়ছি, ব্যায়াম করছি, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছি, এই সমস্ত কাজগুলোর মাঝে হয়তো বা যে কয়দিন বাসায় আছি, তার জন্য আমাদের ভেতরে হয়তো একটু অবসাদ চলে আসতে পারে। আমরা এতদিন ধরে বাসায় আছি ফলে একটু ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। এই কারণে হয়তো মাথায় আসতে পারে, একটু বাসার নিচে যায়। কয়েকজনের সঙ্গে একটু কথা বলি। বাসার সামনের মোড় থেকে একটু হেঁটে আসি। কারও মাথায় বা কারও মনে যদি এই ধরনের চিন্তা উঁকি দিয়ে থাকে তবে এসব যেন আমরা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি। কারণ এই মুহূর্তে বাসায় থাকাটাই নিরাপদ এবং সময়ের দাবি। আমরা যেন এই নিয়মটা মেনে চলি। কারণ এটা যতটুকু আমার জন্য, আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রয়োজ্য, ঠিক ততটুকু অন্যদের জন্য, অন্যদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও প্রযোজ্য। ’

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক আরও বলেন, ‘নিজে নিরাপদে থাকি এবং অন্যদেরও নিরাপদে রাখার চেষ্টা করি। আর এছাড়া মোটামুটি এখন সবাই জানি, আমরা যেন ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি। একদম প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া যেন আমরা বাইরে না যায়। আর যদি আমরা বাইরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয় তবে যেন মাস্ক ব্যবহার করি। সর্দি-কাঁশি-হাঁচি ইত্যাদি যদি এসে থাকে তখন টিস্যু না থাকলে যেন আমরা কনুই ব্যবহার করি। কাঁশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় যেন আমরা মুখ ঢেকে রাখি। এই সমস্ত নিয়মাবলী যেন আমরা মেনে চলি এবং এই মুহূর্তে যেটা বড় কথা বা সময়ের দাবি তা হচ্ছে, আমরা যেন বাসায় থাকি। এটা সবার জন্যই মঙ্গলজনক’।

করোনা আক্রান্ত থেকে শুরু করে এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দেওয়ার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ডাক্তার-নার্সরা। তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আরেকটা জিনিস না বললেই নয়।  আমাদের ডাক্তার-নার্সরা এবং এই মুহূর্তে যারা চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত আছেন তাদের সবাইকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ইনশাল্লাহ, করোনা ভাইরাসের মতো এই দুরারোগ্য রোগের সময়ে যেভাবে উনারা এগিয়ে আসছেন এবং দেশকে সার্ভিস দিচ্ছেন তার জন্য আমি আমার মন থেকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা এই মহৎ কাজের জন্য অবশ্যই পুরস্কৃত হবেন। ’

এছাড়া করোনা রোধে স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন অফিস বন্ধ থাকায় কষ্টে পড়েছে দিনমজুররা। বেকার হয়ে পড়েছে অসংখ্য লোক। সেসব শ্রমজীবী মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়ানোর আহ্বান ছিল বাংলাদেশের এই মিডলঅর্ডর ব্যাটসম্যানের কণ্ঠে, ‘আরেকটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, আমরা যারা শ্রমজীবী মানুষ আছি, যারা এখন বেকার হয়ে পড়ছেন তাদের পাশে দাঁড়ানোটা অনেক বেশি জরুরি। আমরা চেষ্টা করবো, যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার এবং তাদেরকে সাহায্য করার। তাহলে এই জিনিসগুলো আমরা কিছুদিন মেনে চলি। সবাই নিজেদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একত্রে কাজ করি। ইনশাল্লাহ, আমরা এ কঠিন সময় পার করবো এবং ভালো সময় খুব দূরে নয় এটা আমি বিশ্বাস করি। সবাই একত্রে মিলে চেষ্টা করি দেশকে ভালো কিছু দেওয়ার। সবাই ভালো থাকবেন, নিরাপদে থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ। ’

বাংলাদেশে সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
ইউবি/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।