ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ক্রিকেটার সৌম্যর বিয়েতে মারামারি!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
ক্রিকেটার সৌম্যর বিয়েতে মারামারি! ক্রিকেটার সৌম্য সরকারের সঙ্গে স্ত্রী প্রিয়ন্তি দেবনাথ পূজা ও আটক দুই চোর। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: সানাইয়ের সুর, ঢোলের তাকধুম এক উৎসবমুখর পরিবেশ। রংচঙে বাহারি পোশাক আর নানা বর্ণের রকমারি সজ্জা। এমন জাঁকালো আয়োজনের মাধ্যমে গাঁটছড়া বাঁধছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার সৌম্য সরকার।

এমন এক মোহনীয় ক্ষণে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় অভিজাত খুলনা ক্লাবে দুই পরিবারের মিলন মেলার ভিড়ে মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে শুরু হয় হট্টগোল।

সৌম্যর বাবা কিশোরী মোহন সরকার, বরযাত্রী শিল্পপতি দ্বীনবন্ধু মিত্র ও সৌম্যর বন্ধু অলিসহ সৌম্যর স্বজনদের সাতটি মোবাইল চুরি হয়।

এ সময় সৌম্যর মেঝ ভাই ইনকাম ট্যাক্সের ডেপুটি কমিশনার প্রণব কুমার সরকার খুলনা ক্লাবের কর্মচারীদের মোবাইল চুরির বিষয়ে অবহিত করেন। পরে চোর শনাক্ত করতে যান। চোরের পক্ষ হয়ে ক্লাবের কয়েকজন কর্মচারী ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। প্রণব ও অলিদের ওপর ক্লাবের কর্মচারীরা দফায় দফায় হামলা চালান। এতে তারা আহত হন। প্রায় আধা ঘণ্টা থমকে যায় পুরো বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। তখন সাত পাকে ঘুরছিলেন বর সৌম্য। যে কারণে তিনি উঠে আসতে পারেননি।

সৌম্য সরকারের মামা স্বদেশ কুমার সরকার বলেন, প্রচন্ত ভিড়ে গেট থেকে ঢোকার সময় দ্বীনবন্ধু মিত্রের মোবাইল চুরি হয়ে যায়। এরপর সৌম্যর বাবা, বন্ধু অলিসহ বর যাত্রীদের সাতটি মোবাইল চুরি হয়। চোরদের হাতে নাতে ধরে ফেললে খুলনা ক্লাবের কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা করেন।

তিনি বলেন, এ ঘটনাটি খুলনা ক্লাব কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রথমেই আমলে নিলে বরযাত্রীতে এসে সৌম্যের স্বজনদের মার খেতে হতো না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, মোবাইল চুরি হওয়ার পর হারানো মোবাইল নম্বরে কল দেন সৌম্যের স্বজনরা। তখন একজনের কাছে মোবাইল বেজে উঠে। তাকে আটক করে তল্লাশি করে তার কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে গন্ডগোলোর সূত্রপাত হয়।

আক্ষেপ করে সৌম্যের এক স্বজন বলেন, তারকা এ ক্রিকেটারের বিয়েতে এ ধরণের ঘটনায় আমরা লজ্জিত, অপমানিত। সৌম্যর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সামনে এসে ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল। যেহেতু সৌম্যের স্বজনরা তাদের মেহমান। মেহমানের অপমানে তাদেরও অপমানিত হওয়ার কথা কিন্তু তাদের মধ্যে তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

এদিকে এ ঘটনার পর খুলনা ক্লাবে বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। পরে পুলিশ ও ক্লাব কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন লোকজন সৌম্যের অভিভাবকদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন।

ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম বাহার বুলবুল বাংলানিউজকে বলেন, মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে খুলনা ক্লাবের স্টাফ ও বরযাত্রীর লোকদের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। সেখানে কাউকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তবে ভিড়ের মধ্যে কারো গায়ে একটু ধাক্কা লাগতে পারে। দুই মোবাইল চোর থানায় আটক রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

খুলনার মেয়ে প্রিয়ন্তি দেবনাথ পূজার সঙ্গে খুলনা ক্লাবেই সাতপাকে বাঁধা পড়লেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সৌম্য সরকার।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করলেন এ তারকা ক্রিকেটার। জাঁকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলেন তিনি। পাঁচশ বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে আসেন সৌম্য।

প্রিয়ন্তি দেবনাথের বাবা গোপাল দেবনাথ ব্যবসায়ী এবং মা মাধবী দেবনাথ গৃহিণী। তাদের বাড়ি খুলনা শহরের টুটপাড়া এলাকায়। পূজা বর্তমানে ও লেভেল পড়ছেন ঢাকার একটি কলেজে। তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
এমআরএম/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।