ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

অ্যাডিলেইড ওভাল থেকে জিনিয়া জাহিদ

উত্তেজনার তুঙ্গে পাক-ভারত ম্যাচ

জিনিয়া জাহিদ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৫
উত্তেজনার তুঙ্গে পাক-ভারত ম্যাচ ছবি: সংগৃহীত

অ্যাডিলেইড ওভাল থেকে: বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে আমার এই লেখাটি যখন প্রকাশিত হবে, তার আগেই শুরু হয়ে গেছে বিশ্বকাপ আসরের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত ও ব্যয়বহুল ম্যাচটি। কাঙ্ক্ষিত বলছি এই কারণে যে, আইসিসি থেকে এই ম্যাচটির টিকেট ছাড়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই সোল্ড-আউট (বিক্রি শেষ) হয়ে যায়।

যদিও আইসিসি থেকে গত শুক্রবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ করেই পুনরায় কিছু টিকেট বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়, তাও মিনিট দুয়েকের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। আর ব্যয়বহুল বলছি এই কারণে যে, বিশ্বকাপ ক্রিকেটের টিকেট যেন কালোবাজারে কেউ বিক্রি করতে না পারে, তার সর্বোচ্চ সতর্কতা সত্ত্বেও পাক-ভারত ম্যাচের ২০ ডলারের একেকটি টিকেট ২০০০ ডলারে বিক্রি হওয়ার খবরও অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াতে প্রচার হয়েছে। শুধু অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন রাজ্য থেকেই নয়, প্রচুর দর্শক শুধু এই একটি খেলা দেখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অ্যাডিলেইডে এসেছে।
 
এমনিতেই মেলবোর্ন-সিডনির চেয়ে অ্যাডিলেইডে লোকসংখ্যা অনেক কম, কিন্তু শনিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) যেন ছোট্ট এই শহরের সর্বত্রই ছিল উপচেপড়া ভিড়। অ্যাডিলেইড শহরের আনাচে কানাচে গতকাল (শনিবার) বেশিরভাগ পাক-ভারত সমর্থকদের নিজ নিজ দেশের জার্সি পরে ঘুরতে দেখা গেছে। এমনকি গতকাল বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাত্রিযাপনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।
 
শনিবার অ্যাডিলেইড ওভালে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভারত ক্রিকেট দল অনুশীলনে আসে।   নেটে বেশকিছুক্ষণ ঘাম ঝরিয়ে তারা ওভালে অনুশীলন করে। তারকা খেলোয়াড় বিরাট কোহলিকে অনুশীলনে অত্যন্ত সিরিয়াস বলে মনে হল।   অটোগ্রাফ শিকারিদের থেকে নিজেকে দূরে রেখেই তিনি ফিল্ডিং করলেন অনেকক্ষণ। এছাড়া, শিখর ধাওয়ান, উমেশ যাদব ও ধোনিসহ অন্যরাও এমনভাবে অনুশীলন করছিলেন যেন, এই  ম্যাচটিই হবে তাদের জন্য ফাইনাল ম্যাচ।
 
ভারতীয় দলের মতই বিকেলের অনুশীলনে পাকিস্তান দলকেও অত্যন্ত সিরিয়াস মনে হলো। এদিন তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেইসঙ্গে রোদের প্রচণ্ড তাপ। গনগনে সূর্যের নিচে ৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতেই যেখানে জানের দফারফা, সেখানে পাকিস্তান দলের প্রায় সবাইকেই ওভালে অনেকক্ষণ অনুশীলনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেল। পালা করে খানিকটা সময় সাইডলাইনে জিরিয়ে নিয়ে আবার মাঠে দৌঁড়াতে দেখা গেল খেলোয়াড়দের।
 
দু’দেশের খেলোয়াড়েরা অনুশীলনে যতটা সিরিয়াস, মাঠের বাইরের চেহারা ছিল সম্পূর্ণই বিপরীত। দু’দেশের সমর্থকদের পতাকা নিয়ে একসঙ্গে অনুশীলন উপভোগ করতে দেখা গেল। এছাড়া, ওভালের বাহিরে ঢাক-ডোল নিয়ে উত্সব আমেজে দুই দলের সমর্থকদের একসঙ্গে কোলাকুলি করতেও দেখা গেল। বেশ কিছু ভারতীয় সমর্থককে দল জিতবে কিনা সন্দেহ পোষণ করতে দেখলাম। তাদের ভাষ্য হলো, ভারতীয় দলটি গত কয়েকমাস ধরে টানা খেলতে গিয়ে ভীষণ ক্লান্ত। এছাড়া, শচীন টেন্ডুলকারের জন্য অনেককেই হা-হুতাশ করতে দেখলাম। সৌরভ গাঙ্গুঙ্গিকে দেখলাম ওভালের সামনে নদীর ধারে  জনপ্রিয় একটি ভারতীয় টিভি চ্যানেলকে ম্যাচ নিয়ে আগাম ভবিষ্যৎবাণী করতে।
 
রোববার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচের দিন সকাল থেকেই দলে দলে ভারতীয় ও পাকিস্তানি সমর্থকদের ওভালের দিকে ছুটতে দেখছি। সবার হাতেই ৪-৬ লেখা ব্যানার ও সেইসঙ্গে নিজ নিজ দেশের পতাকা। এদিনও তাপমাত্রা থাকবে ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। সকাল থেকে আবহাওয়ার তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই বাড়ছে পাক-ভারত ম্যাচের উত্তেজনার পারদ।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।