অস্ট্রেলিয়ার আইকনিক ক্রিকেট পরিবারের অংশ চ্যাপেল ভাইরা। বড় ভাই ইয়ান চ্যাপেল ও মেজ ভাই গ্রেগ চ্যাপেল দুজনেই নেতৃত্ব দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়াকে।
ক্রিকেটার হিসেবে রেডপাথ কেমন ছিলেন সে প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রখ্যাত ক্রিকেট লেখক ও সাংবাদিক গিডিওন হাই বলেন, ‘যেহেতু তার ব্যাটিংয়ের খুব কম তবে মূল্যবান ফুটেজ আছে, তাই তাকে কীভাবে বর্ণণা করবেন বলে ভাবছেন? তিনি এমন এক ব্যাটার যাকে আউট করা ছিল কঠিন। তিনি জানতেন তার অফস্টাম্প কোথায়। শর্ট পিক-আপ নিয়ে সোজা ব্যাটে খেলতেন তিনি, বিশেষ করে ব্যাক-ফুটের ওপর নির্ভরতা বেশি ছিল তার। সানিক্রাস্ট ক্রিকেট কার্ডে তার একটি লেগ গ্ল্যান্স শটের ছবি দেওয়া হয়েছিল। ’
‘হেলমেটবিহীন যুগে বাউন্সার সামলানোর ক্ষেত্রে হুক করার চেয়ে বরং ডাক করতে বা হেলে যেতেই পছন্দ করতেন। অস্ট্রেলিয়ান অন্যতম মহান যুগে, দারুণ ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে জাতীয় দলের স্তম্ভ ছিলেন ইয়ান এবং তার সাহস, অনবদ্য ক্রীড়াব্যক্তিত্ব ও রসবোধের কারণে বিশ্বের অনেকেই তাকে পছন্দ করত। ’
১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৬ টেস্ট ও পাঁচটি ওয়ানডে খেলেছেন রেডপাথ। অভিষেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরির খুব কাছে ছিলেন তিনি। কিন্তু ৯৭ রানেই ফিরতে হয় ডানহাতি এই ওপেনারকে। প্রথম সেঞ্চুরির জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত।
সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্যার ওয়েস হল, চার্লি গ্রিফিথ, স্যার গ্যারি সোবার্স ও ল্যান্স গিবসকে নিয়ে গঠিত বোলিং অ্যাটাকের সামনে ১৩২ রানের ইনিংস খেলেন রেডপাথ। এরপর আরও ৭ সেঞ্চুরিসহ ৪৩.৪৫ গড়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করেন ৪ হাজার ৭৩৭ রান।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারদের মধ্যে এক ওভারে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি এখনো রেডপাথেরই দখলে। ১৯৭০ সালে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের বিপক্ষে সেদিন নিল রোজেনডর্ফের এক ওভারে ৩২ রান (৪ ছয় ও ২ চার) আদায় করেছিলেন তিনি।
ক্যারিয়ারের শুরুতে অপেশাদার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার খেলতেন রেডপাথ। রুলস ফুটবল ক্যারিয়ারের ক্ষতি না করতে ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ক্রিকেট থেকে ম্যাচ ফি নিতে অস্বীকৃতি জানান এই ওপেনার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা সর্বশেষ অপেশাদার ক্রিকেটার তিনি।
অবসরের পর অ্যান্টিক (পুরোনো জিনিসপত্র) ব্যবসায় মনোযোগ দেন রেডপাথ। তবে বছরখানেক পর অংশ নেন ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটে। ১৯৭৫ সালে ভিক্টোরিয়া রাজ্য থেকে এমবিই খেতাবে ভূষিত হওয়া রেডপাথকে ২০২৩ সালে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার হল অব ফেমে জায়গা দেওয়া হয়। চলতি বছর জিলং ক্রিকেট ক্লাবের স্কোরবোর্ডের নামকরণ করা হয় রেডপাথের নামে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২৪
এএইচএস