ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

রমজানে ইন্দোনেশিয়ানরা পালন করেন এলা এলা-পাদুসান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৬ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৮
রমজানে ইন্দোনেশিয়ানরা পালন করেন এলা এলা-পাদুসান ইফতারের জন্য অপেক্ষা করছেন কয়েকজন ধর্মপ্রাণ ইন্দোনেশিয়ান। ছবি: সংগৃহীত

কয়েক হাজার দ্বীপবিশিষ্ট একটি বিশাল রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। এ রাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি দ্বীপের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আলাদা। মুসলিম প্রধান দেশ হলেও ঐতিহাসিক পটভূমি ও ভূ-প্রকৃতির কারণে রমজান মাস ঘিরে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকম আনুষ্ঠানিকতা প্রচলিত। তবে সবার নিয়ত থাকে একই, আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভ। 

ইন্দোনেশিয়ায় রমজান মাস শুরুর দু’দিন আগে পালন করা হয় মিউগ্যাং নামে একটি প্রথা। এদিন সবাই নানাপদের মাংসের খাবার রান্না করেন এবং পরিবারের সঙ্গে রমজান মাসের আগমন উদযাপন করেন।

 

প্রথাটি শুরু হয় ১৭ শতাব্দীতে, সুলতান ইস্কান্দার মুদার শাসনামলে। রমজান মাসের আগমন উপলক্ষে কিছু গরু জবাই করে গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বিতরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন সুলতান। তখন থেকে এ প্রথা ইন্দোনেশিয়ার অনেক অঞ্চলে আজও প্রচলিত।  
চলছে রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংস বিতরণ।  স্থানীয় ভাষায় এ প্রথাকে বলা হয় মিউগ্যাং।
রমজান উপলক্ষে পালন করা ইন্দোনেশিয়ার আরেকটি জনপ্রিয় প্রথার নাম ‘পাদুসান’। সুপ্রাচীন শহর ইয়োগিকার্তার মানুষরা রমজান শুরুর একদিন আগে স্থানীয় মসজিদের পুকুরে গোসল করেন। তাদের নিয়ত রোজা পালনের প্রস্তুতি হিসেবে দেহ ও মনের পবিত্রতা অর্জন। তবে আগে এই প্রথা পালনের জন্য ঝরনার পানিতে গোসল করতো সবাই।  

ইন্দোনেশিয়ায় সেহরির সময় তরুণরা দলবেঁধে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। সঙ্গে থাকে ঢাক-ঢোল ও নানা বাদ্যযন্ত্র। বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সেহরির জন্য ঘুম থেকে তোলা হয় রোজাদারদের। আর দিনের বেলা শুধু খাদ্য গ্রহণ থেকেই বিরত থাকা হয় না, নিজেদের লোভ, ঘৃণা, রাগ, মিথ্যা আশ্বাস, গিবত ইত্যাদি বর্জন করে চলেন সবাই। সমাজের অবস্থাসম্পন্নরা নিজ সম্পত্তির আড়াই শতাংশ যাকাত হিসেবে দান করেন গরিব-দুঃখীদের।
বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সেহেরির জন্য ডাকছেন তরুণের দল।
পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার তেরনাত দ্বীপে শবে কদরের রাতে একটি বিশেষ প্রথা প্রচলিত। এ রাতে দ্বীপের নারী-পুরুষ সবাই বাঁশের তৈরি মশাল হাতে দল বেঁধে বেরিয়ে আসেন রাস্তায়। সারা রাত ধরে দ্বীপের বিভিন্ন রাস্তায় পরিভ্রমণ করেন তারা। এই প্রথাকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘এলা এলা’।  
শবেবরাতে হাতে বাঁশের মশাল নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন তেরনাতের বাসিন্দারা।
মুসলিমদের বিশ্বাস মতে, শবে কদরের রাতে আল্লাহ ফেরেশতার মাধ্যমে কোরআনের আয়াত প্রথমবারের মতো মোহাম্মদের কাছে এসে পৌঁছায়। রাতের আঁধারে মশালের আলোয় সেই ফেরেশতাকে পথ দেখিয়ে দেওয়ার প্রতীকী হিসেবে প্রায় শত বছর ধরে এ প্রথার প্রচলন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।