ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

পাপুয়া নিউগিনির মুসলিমরা রমজানে মসজিদে সময় কাটান বেশি

আতাউর রহমান খসরু, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৬ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
পাপুয়া নিউগিনির মুসলিমরা রমজানে মসজিদে সময় কাটান বেশি পাপুয়া নিউগিনির মুসলিমরা রমজানে মসজিদে সময় কাটান বেশি

ওশেনিয়া মহাদেশের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনি। ১৯৭৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।

ধারণা করা হয়, ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের সঙ্গে সঙ্গে পাপুয়া নিউগিনিতেও ইসলামের আগমন হয়। তবে সে সময় ইসলাম কতোটা বিস্তৃতি লাভ করে তা জানা যায়নি।

এরপর উনিশ শতকে নিউগিনিতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে ইসলামের প্রচার ও প্রসার শুরু হয়।

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মুসলিম কর্মীদের নিউগিনিতে নিয়োগ দেওয়া হলে তাদের মাধ্যমে ইসলামের সঙ্গে পরিচিত হয় এ দ্বীপের মানুষ। ১৯৭৫ সালে স্বাধীনতা লাভের পর প্রথম আদমশুমারি অনুযায়ী পাপুয়া নিউগিনিতে মুসলিম ছিলো মাত্র ১২০ জন। স্বাধীনতা লাভের পর সেখানে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ান কূটনৈতিক ও ব্যবসায়ী এবং ভারত উপমহাদেশের তাবলিগ জামাতের প্রচেষ্টা ইসলামের প্রসার ঘটে।  

১৯৯০ সালে পাপুয়া নিউগিনিতে মুসলমানের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৮০ জনে। ২০০০ সালে ১ হাজার। বর্তমানে সেখানে মুসলমানের সংখ্যা ৫ হাজার। ইসলামই পাপুয়া নিউগিনির সবচেয়ে দ্রুত সম্প্রসারণশীল ধর্ম।
 
পাপুয়া নিউগিনিতে ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ইসলামিক সোসাইটি অব পাপুয়া নিউগিনি। ’ এ সংগঠনের মাধ্যমে স্থানীয় মুসলিম সমাজের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

১৯৮৪ সালে পাপুয়া নিউগিনির রাজধানী পোর্ট মোরসাবিতে প্রথম ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সেন্টারের অধীনে রয়েছে একটি মসজিদ, একটি মাদরাসা, একটি লাইব্রেরি ও একটি চিকিৎসা কেন্দ্র।  

এ ছাড়াও পাপুয়া নিউগিনিতে রয়েছে আরও ১৫টি ইসলামিক সেন্টার। বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক সেন্টারগুলোর প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় যারা সহযোগিতা করে আসছে তাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও সৌদি আরবের বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং রাবেতা আলমে ইসলামি।

পাপুয়া নিউগিনি একটি মিশ্র জাতি সত্ত্বার দেশ। সেখান মুসলিমরাও মিশ্র জাতি সত্ত্বার অধিকারী। তাই রমজানে পাপুয়া নিউগিনিতে বিশেষ কোনো সংস্কৃতির প্রভাব চোখে পড়ে না। ইফতার-সাহরিতে তারা স্থানীয় খাবারই পছন্দ করেন। তবে খাবারে প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার প্রভাব কিছুটা প্রভাব দেখা যায়।

পাপুয়া নিউগিনির মুসলিমরা রমজানকে ইসলামি জ্ঞানচর্চা ও ইসলাম প্রচারের মাস মনে করে। রমজানে তারা দলবদ্ধ হয়ে মসজিদে অবস্থান করে ইসলামি জ্ঞানচর্চা করে। রমজানে প্রতিটি ইসলামিক সেন্টার এক বা একাধিক ইসলাম প্রচারক ও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা সমবেত মুসলিমদের ইসলামের মৌলিক শিক্ষা প্রদান করেন এবং তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ইসলামিক সোসাইটির অধীনেই এসব বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নির্বাচন ও নিয়োগ সম্পন্ন হয়।  
 
ইসলামিক সেন্টারগুলোতে নিয়োগপ্রাপ্ত ইসলামিক স্কলাররা রমজানে পাপুয়া নিউগিনির মুসলিমদের ধর্মীয় বিধি-বিধান শেখানোর পাশাপাশি ইসলাম প্রচারেরও কাজ করেন। সেন্টারে সমবেত মুসলিমদের ইসলাম প্রচারের কৌশল, শিষ্টাচার ও রাষ্ট্রীয় বিধি-নিষেধ শেখান। অতপর তারা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে যায়। তারা ইসলাম সম্পর্কিত বই-পুস্তক ও পোস্টার বিলি করেন। ইসলাম সম্পর্কে জানতে ইসলামিক সেন্টারে আসতে উদ্বুদ্ধ করেন।  

রমজানে ইসলামি শিক্ষা ও ইসলাম প্রচার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করাকে পাপুয়া নিউগিনির মুসলিমরা নিজেদের জন্য আবশ্যক মনে করেন। প্রায় প্রত্যেক মুসলিমই কম-বেশি কিছু সময় মসজিদে অতিবাহিত করেন। সবমিলিয়ে পাপুয়া নিউগিনির মাটিতে ইসলামি আলোর বিচ্ছুরণ হয় পবিত্র রমজানে।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।