উপকূল থেকে ফিরে: শৈশবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। স্কুলের প্রথম দিনই অভিভাবকরা হাত ধরে নিয়ে গিয়ে তুলে দিতেন শিক্ষকদের কাছে।
এসব শিক্ষকদের বাস্তব জীবনে গরু পিটিয়ে মানুষ করতে দেখার অভিজ্ঞতা কারো আছে কি-না, জানা নেই। তবে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালি উপজেলার গণ্ডদুলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, মূল স্কুল ভবনটি সত্যিকার অর্থেই গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছে। কিন্তু সামনের পরিত্যক্ত ভবন থেকে আসা দুর্গন্ধে টিকে থাকা দায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বেনজীর সুলতানা এপি জানান, কিছুদিন আগেও কার্যক্রম ছিল ভবনটিতে। কিন্তু নতুন এ টিনের ঘর ওঠার পর সে অবস্থা আর চলতে পারেনি কেবল স্থানীয়দেরই অত্যাচারে!
তিনি বলেন, নতুন ঘরটি ওঠার পরই গ্রামবাসী গরু-মহিষের গোয়ালে পরিণত করেছেন স্কুল ভবনটিকে। কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। গবাদি পশুর মল-মূত্রে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের রোগের ঝুঁকি।
স্কুলটিতে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১১ জন। ছেলেদের চেয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি। শিক্ষক সংখ্যা ৪ জন।
এপি জানান, যে ভবনটিকে গ্রামবাসী গোয়াল বানিয়েছেন, এতোদিন সে ভবনেই চলেছে শিক্ষা কার্যক্রম। সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ৮০ হাজার টাকায় করা হয়েছে নতুন টিনের ঘর। অফিস ঘরসহ চারটি কক্ষ করা গেছে সেই টাকায়। সেখানেই চলছে বর্তমান শিক্ষা কার্যক্রম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের অবস্থাই এখন চরম ঝুঁকিপূর্ণ। জরাজীর্ণ ভবনগুলো পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অনেক আগেই। কিছু বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ টিনশেড ঘর তুলে কোনোমতে আর বাকিরা বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রেখেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রশাসন সূত্র জানায়, রাঙ্গাবালির কোড়ালিয়া এ রহমান, উত্তর কানকুনিপাড়া, সাজির হাওলা, দক্ষিণ চর রুস্তম, রসুলবাড়িয়া, গণ্ডদুলা এমএইচ, দক্ষিণ কাজির হাওলা, পূর্ব নেতা এইচএম ও উত্তর চালিতাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে বাধ্য হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৬
আরএম/এএসআর