ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ফের তীব্র তাপদাহের কবলে দেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৩
ফের তীব্র তাপদাহের কবলে দেশ -ফাইল ছবি

ঢাকা: ফের তীব্র তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস জনজীবন। থার্মোমিটারের পারদ ওঠেছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা আরও বাড়তে পারে।

তবে বর্ধিত পাঁচদিনে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।

সোমবার (৮ মে) আবহাওয়া অফিস এমন পূর্বাভাস দিয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে। ইতোমধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। আর এই কারণেই বাতাসে আদ্রতা কমে গেছে এবং তাপমাত্রা বাড়ছে। ঝড়ের প্রভাবে বাতাসের সঙ্গে মেঘ এলে তাপপ্রবাহ কমবে।

বর্তমানে দেশের সব বিভাগেই তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এপ্রিলে মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ঈশ্বরদীতে রেকর্ড করা হয় গত ১৭ এপ্রিল, যা আগের নয় বছরের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৪ সালের মে মাসে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

গত ১৬ এপ্রিল ৫৮ বছরের মধ্যে ঢাকার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ, ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সেদিন চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকায় ১৯৬৫ সালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৯৭৫ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এই রেকর্ড এখনো ভাঙেনি।

ওমর ফারুক বলেন, মঙ্গলবার (৯ মে) তাপমাত্রা আরও বাড়বে। এরপর বুধ ও বৃহস্পতিবার থেকে ধীরে ধীরে কমবে। তবে তাপপ্রবাহ থাকবে।

ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী ড. আনন্দ কুমার দাশ জানিয়েছেন, সোমবার একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ আন্দামান সাগরের কাছাকাছি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে। এটি শক্তি সঞ্চয় করে মঙ্গলবার নিম্নচাপে পরিণত হবে একই এলাকায়। এরপর আরও শক্তি সঞ্চয় করে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও আন্দমান সাগরের কাছাকাছি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে এসে বুধবার (১০ মে) রূপ নেবে ঘূর্ণিঝড়ে।

 

ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে মোখা। এই নামটি দিয়েছে ইয়েমেন। কফির জন্য বিখ্যাত স্থানীয় একটি বন্দরের নাম মোখা। কালক্রমে সেখানকার কফির নামকরণও করা হয়েছে মোখা। ইংরেজিতে শব্দটি Mocha লেখা হলেও এর উচ্চারণ হচ্ছে Mokha।

আনন্দ কুমার দাশ আরও জানিয়েছেন, মোখা প্রথমে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হলেও পরে গতিমুখ পরিবর্তন করে বৃহস্পতিবারের (১১ মে) পর বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলে দিকে ধেয়ে আসতে পারে। এই সময়ের মধ্যে আন্দমান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হবে। ১২ মে পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ওঠতে পারে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এই সময়ে ওই এলাকায় সাগর প্রবল উত্তাল থাকবে।

চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের উপ-পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. ছাদেকুল আলম এ বিষয়ে বলেন, মাত্র লঘুচাপ সৃষ্টি হলো। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে, সেই সময়ের মধ্যে অনেক গতিবিধি পরিবর্তন হবে। রোবাবার গাণিতিক মডেলের যে পর্যবেক্ষণ ছিল, আজ কিছু পরিবর্তন এসেছে। কাল যেটা আসবে সেটাতেও পরিবর্তন আসতে পারে। যদি এটি এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে যায়, তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলে আসবে। আর যদি আরও উত্তর দিকে যাওয়ার পর গতিমুখ পরিবর্তন করে তবে বাংলাদেশে উপকূলে আসবে। এক্ষেত্রে আগামী রোববার (১৪ মে) উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০  ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৩
ইইউডি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।