ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্যারিয়ার

তারা আর বেকার নন

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
তারা আর বেকার নন চাকরির নিয়োগপত্র হাতে তরুণ-তরুণীরা। ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: গ্রাম্য পরিবেশে নানা চিত্তাকর্ষক উপাদান সহযোগে আয়োজিত মিলনমেলা আবহমান বাংলার সংস্কৃতির অংশ। যা মেলা নামে পরিচিত। কী থাকতো না সেখানে! তবে, কালের বিবর্তনে আমাদের সংস্কৃতিতে মেলা যে ছবি তৈরি করে রেখেছে তাতে কিছুটা বদল ঘটেছে এটা বলতেই হবে। এখন মেলা আর আগের ছকে সীমাবদ্ধ নেই। নানা ব্যতিক্রমী উদ্যোগের পাশাপাশি যে কোনো বিষয় কেন্দ্র করেই এখন মেলা আয়োজিত হচ্ছে। চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়ন মেলা এরই নমুনা।

মেলা আয়োজিত হলে গ্রামীণ জীবনে আসতো প্রাণচাঞ্চল্য। ঠিক তেমনই কক্সবাজার জেলায় আয়োজিত চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়ন মেলা প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়েছে ২৮৬ তরুণ-তরুণীর জীবনে।

তার এখন আর বেকার নন। নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে নতুন জীবন শুরুর স্বপ্ন এখন তাদের চোখেমুখে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহিদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের উখিয়ায় শেষ হওয়া চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়ন মেলায় নিবন্ধন করার পর চাকরি পাওয়া ২৮৬ জনকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। কক্সবাজার জেলার প্রশাসক মো. কামাল হোসেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তাদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক নতুন নিয়োপত্র পাওয়াদের উদ্দেশ্যে বলেন, এটা দক্ষতা অর্জনের সুযোগ। কর্মস্থলে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে ইংরেজিতে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে।

স্থানীয় বেকার যুবকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য উখিয়ায় দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।

অনুষ্ঠানে নিয়োগপত্র হাতে পাওয়া শাহ মো. ইমরান বলেন, পড়াশোনা শেষ করে বহুদিন বেকার ছিলাম। নিয়োগপত্র হাতে পেলাম, খুব ভালো লাগছে।

একই অনুষ্ঠানে নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন শেলী চৌধুরী। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে শেলী বলেন, চাকরি পাওয়া তো অবশ্যই খুশির খবর, ভালো তো লাগবেই। মনোযোগ দিয়ে দায়িত্ব পালন করে আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করে যাবো।

উখিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়ন মেলার সদস্য সচিব মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, প্রাথমিকভাবে দেশি ও আন্তজার্তিক ২১টি সংস্থায় এ ২৮৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে প্রান্তিক উন্নয়ন সোসাইটিতে ৩ জন,  পালস বাংলাদেশে ২০ জন, ইপসায় ১৫ জন, কারিতাস-এ ১০ জন, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২ জন, অক্সফাম-এ ৫ জন, কোডেক-এ ৫ জন, কোস্ট ট্রাস্ট্রে ৮ জন, শেডে ৬ জন, মুক্তি কক্সবাজারে ২৭ জন, রিসডা বাংলাদেশে ২০ জন, কেয়ার বাংলাদেশে ১৮ জন, এসআরপিভিতে ৯ জন, ব্র্যাকে ১০৩ জন, ঢাকা আহসানিয়া মিশনে ১৫ জন, বাস্তবে ১ জন, মুসলিম হ্যান্ড ইন্টারন্যাশনালে ২ জন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থায় ৩ জন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালে ৭ জন, আসিয়াবে ১ জন ও এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথে ৬ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

তিনি আরও জানান, নিয়োগ পাওয়া তরুণ-তরুণীরা উখিয়া, টেকনাফ, রামু, কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও  মহেশখালীর বাসিন্দা।

চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়ন মেলার আহবায়ক ও কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আবসার বাংলানিউজকে বলেন, শুধু এ ২৮৬ জন নয়, পর্যায়ক্রমে নিবন্ধিত সবাইকে চাকরি দেওয়া হবে। এছাড়াও কেউ চাইলে নতুন করে নিবন্ধন করার সুযোগ পাবে।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিতে গিয়ে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় জনগোষ্ঠী। ফলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে স্থানীয়রা পিছিয়ে যাচ্ছেন। দেখা দিচ্ছে সংকট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য চাকরি ও দক্ষতা উন্নয়ন মেলার আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। মেলাকে ঘিরে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বায়োডাটা জমা দিয়ে নিবন্ধনের আহবান জানানো হলে গত ৬ জুলাই পর্যন্ত ৩ হাজার ৩০৬ জন আবেদন করে। ওখান থেকে ৩১৮ জনকে ওইদিনই বাছাই করা হয় চাকরির জন্য। যার মধ্যে ২৮৬ জন আজ নিয়োগপত্র হাতে পেলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
এসবি/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।