ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

বাজে বিদায়ের সুর, সিরিয়াস বইয়ের খোঁজ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
বাজে বিদায়ের সুর, সিরিয়াস বইয়ের খোঁজ পাঠকরা বই খুঁজছেন, ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রায় শেষের পথে। বাজছে বিদায়ের সুর। মাসব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হওয়া বইমেলার বাতি নিভবে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে। এবার সার্বিকভাবে ছিল ‘সিরিয়াস’ লেখকদের বিশেষ বইগুলোর প্রতি বই প্রেমিদের ঝোঁক।

২৭তম দিনে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, সব স্টলেই ভিড়। মানুষজন কিনেছেন বই।

এদিকে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ অথবা গুরুগম্ভীর বই রয়েছে, যেসবের স্টলের/প্রকাশনীর নাম অনেকেই জানেন না। আর তাই এসব স্টল খুঁজে পেতে অনেকে গলদঘর্মও হয়েছেন। ‘আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর’ বইটি খুঁজছিলেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী আহমেদ সুলতান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বইটির নামই শুধু শুনে এসেছি। কিন্তু প্রকাশনীর নাম জানি না। তথ্যকেন্দ্র থেকে অনেক চেষ্টা করে খুঁজে বের করেছি প্রকাশনীর নাম ও স্থান।
 
বোঝাই গেলো রাজনীতি সচেতন এই পাঠক সিরিয়াস ধরনের বইটাই বেশি পছন্দ করেন। তার সঙ্গে হেঁটে হেঁটেই অবশেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক কোণায় পাওয়া গেলো কাঙ্ক্ষিত স্টল `খোশরোজ কিতাব মহল'। আবুল মনসুর আহমদের লেখা বইটি অবশেষে তিনি নিলেন।

প্রকাশনীটির মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে এই একটি বইয়ের জন্যই এখন উপচে পড়া ভিড়। প্রথম দিকে তো স্টল বন্ধ রেখে চলেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু আস্তে আস্তে ক্রেতা বেড়েছে। ২৭তম দিনেও বেশ ভালো বিক্রি।
 
এদিকে মেলায় অনেকে আহমদ ছফা, সরদার ফজলুল করিম, মুনতাসীর মামুনদের মতো উচ্চ মানের লেখকের বই কিনছেন। অনেককেই আবার দেখা গেছে, হাদিস, কিতাব বা পবিত্র কুরআন ও এর অনুবাদ খুঁজছেন।
 
কথা প্রকাশ থেকে মুনতাসীর মামুনের একটি বই অনেক পাঠককেই খুঁজতে দেখা গেলো। আব্দুর রহীম নামের ওই পাঠক বলেন, শুধু গল্প উপন্যাস পড়লেই কি হবে। ইতিহাস, রাজনীতি বিষয়ক বইও পড়তে হবে। তাই নিয়ে নিচ্ছি।

মেলার ২৭তম দিনে নতুন বই এসেছে ১৫৫টি। আর মোডক উন্মোচন হয়েছে ৪০টি নতুন বইয়ের। এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির পরিচালক (জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ) অপরেশ কুমার ব্যানার্জী। যেসব বই প্রকাশ হয়েছে এগুলোর মধ্যে রয়েছে, গল্প ১৬টি, উপন্যাস ২৫টি, প্রবন্ধ ৭টি, কবিতা ৪৭টি, গবেষণা ২টি, ছড়া ১৯টি, শিশুসাহিত্য ৩টি, জীবনী ৮টি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ৩টি বই। এছাড়া বিজ্ঞান বিষয়ক ২টি, ভ্রমণ ১টি, রাজনীতি বিষয়ক ১টি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য বিষয়ক ২টি, সায়েন্স ফিকশন ৩টি ও অন্যান্য ১৬টি বই প্রকাশ হয়েছে।
 
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মেলায় বিকেল ৪টায় মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশের প্রকাশনা: গ্রন্থ পরিকল্পনা ও সম্পাদনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারিক সুজাত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মফিদুল হক, বদিউদ্দিন নাজির এবং খান মাহবুব। সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ।

প্রাবন্ধিক তারিক সুজাত বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে প্রকাশনার মান যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি প্রকাশনার ক্ষেত্রে পেশাদারি দৃষ্টিভঙ্গিও তৈরি হয়েছে। ডিজিটাল ফটোগ্রাফি, ডিজিটাল ইমেজ- এসব বিষয়গুলো হাতের নাগালে চলে আসায় প্রকাশনা সহজ হলেও এর জটিল দিকও উন্মোচিত হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ভালো মানের বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনার জগতে দক্ষ জনশক্তি ও অধিক বিনিয়োগ দুটিই প্রয়োজন। সেই সঙ্গে জাতীয় গ্রন্থনীতি ও গ্রন্থাগারনীতি বাস্তবায়ন করাও জরুরি হয়ে পড়েছে।
 
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল প্রবীর দত্তর নির্দেশনায় এবং গীতাঞ্জলি ললিতকলা একাডেমির পরিবেশনায় নাটক মুনীর চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
ইইউডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।