ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

জাফর ইকবালকে ঘিরে অটোগ্রাফ-সেলফির বন্যা

সাজেদা সুইটি, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
জাফর ইকবালকে ঘিরে অটোগ্রাফ-সেলফির বন্যা ছবি: জি এম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: ভালোবাসারও নাকি অত্যাচার হয়, তবে তা অনেক মধুর। আর সৌভাগ্যবান মুহম্মদ জাফর ইকবালও সইছেন সে অত্যাচার।

শিশু-কিশোর শুধু নয়, তরুণরাও তাকে ঘিরে সেলফি তুলছেন, অটোগ্রাফ নিচ্ছেন নতুন বইয়ে।
 
শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এবারের মেলার ১৩তম দিনে দ্বিতীয়বারের মতো পাওয়া গেলো এ কথাসাহিত্যিককে। শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রথমবারের মতো এবারের মেলায় আসেন তিনি।
 
এদিন বিকেলে এসে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের নজরুল মঞ্চে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। এরপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের হুমায়ূন চত্বরে গড়া নতুন মঞ্চটিতে আসেন। এবারের মেলায় প্রকাশিত সবকটি সায়েন্স ফিকশন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রথম সায়েন্স ফিকশন বই লেখেন হুমায়ূন আহমেদ। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই।
 
শুধু অনুষ্ঠান শেষের অপেক্ষা। অপেক্ষারতরা যেনো ঝাঁপিয়ে পড়লেন তার ওপর। এক পর্যায়ে মঞ্চে পা ঝুলিয়ে বসে পড়তে বাধ্য হন তিনি। এমন জটলায় তার চেহারাটি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়লো ফটোসাংবাদিকদের জন্য।  
 
এভাবেই দীর্ঘসময় অটোগ্রাফ ও সেলফিতে হাসিমুখ দেন তিনি।
 
তবে এমন অত্যাচারের সুখটুকুই উপভোগ করেন শিশুপ্রেমী এ লেখক। আলাপে বলেন, লিখিতো তাদের জন্যই। তারা পড়ছে, এটি আমাদের সৌভাগ্য। দায়িত্ব আরও বেড়ে যায় তাদের এ আগ্রহ দেখে। মনে হয়, আরও ভালো লিখতে হবে। তাদের খুশি-খুশিতে জ্ঞানের দিকে আগ্রহী করতে হবে।
 
এ শিক্ষাবিদ আরও বলেন, চমৎকার অনুভূতি হয় মেলায় এসে। খুব ভালো লাগে। কচি কচি হাতে ওরা বই নেড়েচেড়ে দেখছে, আমার প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
 
স্ত্রী ইয়াসমিন হককে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু অটোগ্রাফ শিকারীদের কবলে পড়ে দু’জন প্রায়ই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছিলেন।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং শিক্ষার্থী শাহিদা মিতু আহত হাত কাঁধে ঝুলিয়ে এসে দু’দিনের প্রচেষ্টায় অটোগ্রাফ নিতে পারলেন। মিরপুর থেকে আসা তিনবোন ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে প্রায় কান্নার উপক্রম করছিলেন। কাছ ঘেঁষতে না পেরে দূর থেকে একটি সেলফি নিলেন তারা, যেটিতে জাফর ইকবালের মাথার সামান্য একটু অংশই কেবল দেখা গেল।
 
এদিকে জাফর ইকবালের আগমনে তার বইয়ের বিক্রি বেড়েছে শতগুণ। জানালেন, তাম্রলিপির প্রকাশক একেএম তারিকুল ইসলাম রনি।
 
বাংলানিউজকে বলেন, এমনিতেই স্যারের বইয়ের চাহিদা বেশি। এর মধ্যে তিনি এলে স্টলে পাঠকরা যেনো হুমড়ি খেয়ে পড়েন। আমাদের প্রকাশনী থেকে বের হওয়া নতুন বই ‘ক্রেনিয়াল’ সবচে বেশি বিক্রি হচ্ছে। স্যার এলে বিক্রি অনেক বেড়ে যায়।
 
বিকেলের অনুষ্ঠানটিতে জাফর ইকবাল বলেন, বাংলাদেশের পাঠকরা হুমায়ূন আহমেদকে মনে রেখেছেন। এখনও অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে দেখি, হুমায়ূন আহমেদের বই সেটি। এটি আমার জন্য খুব আনন্দের।
 
ভবিষ্যতে সায়েন্স ফিকশন মুভি ও নাটক দেখতে চান বলে জানান ইয়াসমিন হক। যেভাবে বই জনপ্রিয় হয়েছে, মুভিও সেভাবে জনপ্রিয় হবে বলে আশা তার।
 
জাফর ইকবালের নেতৃত্বে তার ছাত্র-ছাত্রীরা একটি রোবট তৈরি করেছে এবং সেটি কথা বলতে ও শুনতে পারে বলে জানান তিনি। এটি মার্চে প্রদর্শন করা হবে।
 
বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি’র সভাপতি লেখক মোশতাক আহমেদ বলেন, সায়েন্স ফিকশনে আগ্রহ বাড়াতে চাই বলেই আমরা এসব আয়োজন করছি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
এসকেএস/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।