ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

১ অক্টোবর থেকে সবাই রেডি হয়ে যান: মওদুদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
১ অক্টোবর থেকে সবাই রেডি হয়ে যান: মওদুদ

ঢাকা: দলীয় নেতাকর্মীদের আগামী ১ অক্টোবর থেকেই আন্দোলনের জন্য ‘রেডি’ হয়ে যেতে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। কারণ এই স্বৈরাচারী সরকারকে অপসারণ করতে হলে সারাজাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, মাঠে নামতে হবে।’

‘খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি’তে মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত যুবসমাবেশে মওদুদ এ কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১ কেন্দ্রীয় কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে।

মওদুদ বলেন, এবার আর খালি মাঠে গোল দিতে দেবো না। জনগণকে নিয়ে থাকবো, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, আগামী নির্বাচনে অংশ নেবো এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের মাধ্যমে সরকারকে অপসারণ করবো। কোনো সহিংসতার মাধ্যমে নয়। এই প্রেসক্লাবে এসব করে কাজ হবে না। ১ অক্টোবর থেকে সবাই রেডি হয়ে যান।

আওয়ামী লীগ মিথ্যাচারে ‘চ্যাম্পিয়ন’ অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, আমরা কেউ তাদের সঙ্গে মিথ্যাচারে পারবো না। তারা অকথ্য মিথ্যাচার করে। মিথ্যাচারের কোনো শেষ নেই।

বিএনপির এ নেতা বলেন, কোনো ঘটনাই ঘটেনি, তারপরও ভৌতিক মামলা, গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। চমৎকারভাবে বর্ণনা করা হয়। দেখতে মনে হয় যেন সত্যিই ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশের সকল গ্রামে গ্রামে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছাত্রলীগ, যুবলীগের সহায়তায় একশো-দেড়শো নাম দিয়ে বাকি অজ্ঞাত আসামি রেখে মামলা দেওয়া হয়। ফ্যাসিস্ট দেশেই এটা সম্ভব, কোনো গণতান্ত্রিক দেশে এটা হতে পারে না।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্প্রতি ড. কামাল হোসেন ও ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গঠিত হয়। এই জোট গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর নাট্যমঞ্চে নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সরকারকে সংসদ ভেঙে দিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠনসহ কয়েক দফা দাবি দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জোট প্রসঙ্গে বলেন, ‘খুনি, দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী ঘুষখোর ও সুদখোররা সব আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়েছে। ’

এ প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, প্রথম দিকে ঐক্য প্রক্রিয়াকে সরকার স্বাগত জানিয়েছিল। এমনকি প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতায় স্বাগত জানিয়েও আবার বলেছেন, এই ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত তারা সবাই দুর্নীতিবাজ, সুদখোর, ঘুষখোর। এদের নিয়ে ঐক্য করা হয়েছে, এরা জনগণের জন্য কিছু করতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের অশালীন বক্তব্য আমরা কখনো আশা করি না । প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে প্রমাণ হয়, সরকার আতঙ্কিত হয়েছে, বিচলিত হয়েছে।

তার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, বক্তব্য প্রত্যাহার না হলে রাজনীতিতে কোনো শালীনতা আর থাকবে না। কারণ দুর্নীতির কথা যদি বলেন বর্তমান সরকারের চাইতে গত ৫০-৬০ বছরে এতো দুর্নীতি কেউ করেনি। এমনকি পাকিস্তান আমলেও নয়। আর আপনি আমাদেরকে দোষারোপ করছেন।

সরকারকে স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে মওদুদ বলেন, তাদের আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা দেখলেই বোঝা যায় সব। আর মাত্র তিন মাসও বাকি নেই। (বিএনপি প্রধান) খালেদা জিয়ার নামে যেসব মামলা আছে সেসব-সহ সকল মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। একটা নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করা উচিত, যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের ভোট দিয়ে পছন্দের সরকার নির্বাচিত করতে পারে। সেখানে তারা হাজার হাজার মামলা দিচ্ছে।

মওদুদ বলেন, পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে গত ১০০ বছরে সবচেয়ে বড় ডিক্টেটর (স্বৈরাচার) হচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব আপনাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে, আমরা বললাম না বললাম তাতে কিছু আসে যায় না।

যুবসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার, বিএনপি নেতা মিয়া মো. আনোয়ার, জাসাস নেত্রী শাহরিয়া ইসলাম শায়লা প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।