ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

‘প্রধানমন্ত্রী একদলীয় শাসনের পথে এগোচ্ছেন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৮
‘প্রধানমন্ত্রী একদলীয় শাসনের পথে এগোচ্ছেন’ বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন যে পথে এগোচ্ছেন সে পথ হচ্ছে একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করার পথ। এখানে জনগণের রায় দেওয়ার কোনো পথ দেখছি না আমরা, জনগণের রায় নেওয়ার কোনো ইচ্ছেও তার নেই।

সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী নির্বাচন যে সব দলের অংশগ্রহণে হবে তার কোনো ইচ্ছা বর্তমান সরকারের নেই।

সামনে নির্বাচন অথচ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু করেছে। এর মাধ্যমে তারা একটা নির্বাচন করতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী বলছেন দেশে গণতন্ত্র আছে, এটি কোন গণতন্ত্র? যেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার-নির্যাতন করা হবে আর সরকারি দল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাবে। এভাবে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে দেয়া শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য গোটা জাতিকে হতাশ করেছে। কারণ, দেশের এই ক্রান্তিকালে, বিশেষ করে যখন সামনে নির্বাচন সেই সময় জনগণের যে অধিকারগুলো নিয়ে প্রশ্ন, সেই অধিকারগুলো আর নির্বাচন নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন তাতে গোটা জাতি হতাশ হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে এখন যে সংকট চলছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সংকট হলো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। সেটি সমগ্র জাতির দাবি, সমগ্র দেশের মানুষের দাবি, সেটি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সব কিছু হবে। সংবিধান তো মানুষের তৈরি। ইতোপূর্বে যে সংবিধান ছিলো সেটিও তাদের তৈরি। সেটিকে তো তারা অনেকবার পরিবর্তন করে নিজেদের দলের সুবিধা মতো করে নিয়েছেন।  

মির্জা ফখরুল বলেন, জাতি আশা করেছিলো, জনগণের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী একটি ইতিবাচক কথা বলবেন। সব দলের সমান সুযোগ সৃষ্টি করে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু সেটি তিনি করতে পারেননি। এটার সম্পূর্ণ ব্যর্থতা তাদের, এর দায় দায়িত্ব তাদের নিতে হবে।

বিএনপির সাথে কোনো সংলাপ হবে না প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগে ২০১২-১৩ সালেও তারা সংলাপের দাবি উপেক্ষা করেছিলো, পরে বাধ্য হয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা জনগণের দাবি নিয়ে লড়াই করছি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, জনগণের রায় প্রদান এসব তো বিএনপির দাবি নয় জনগণের দাবি। আমরা জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে লড়াই করে যাচ্ছি। আমরা সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব চাই, আর সেটি জনগণেরই দাবি। আমরা শুধু জনগণের দাবির প্রতি সমর্থন রেখে একটি প্রতিধিত্বশীল সংসদের জন্য আন্দোলন করছি। যেখানে সবাই জনগণের কাছে জবাব দিতে বাধ্য থাকবে। এ জন্য খালেদা জিয়া কারাগারে, বিরোধী রাজনৈতিক অনেক নেতাকর্মী কারাগারে আছেন। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য জনগণই ব্যবস্থা নেবে, তারাই সেটির জবাব দেবে।

ইভিএম দ্রুত চাপিয়ে দেওয়া উচিত হবে না প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এটাতো আমরা আগেই রিজেক্ট করে দিয়েছি। তার কথার সাথে কী সম্পর্ক?

নির্বাচন যথাসময়ে হবে, কে আসবে না আসবে তাতে কিছু করার নেই, নির্বাচনে বাধা দেয়ার শক্তি কারো নেই- শেখ হাসিনার এসব কথার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এ কথাগুলো বলেই তারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করছে, রাষ্ট্রীয় যন্ত্রগুলো ব্যবহার করে একদলীয় শাসন কায়েম করছে। তাই এসবের জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, তাদের দাবি আদায় করে নিতে হবে।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত বাংলাদেশ ইয়ুথ পার্লামেন্ট ২০১৮ অনুষ্ঠানেও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এ দেশ সেই দেশ যেখানে হুমায়ূন আহমেদের মতো লেখকের বই আদালতের মাধ্যমে বাতিল করা হয়, শহিদুল আলমের মত লোককে কারাগারে থাকতে হয়, যিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ যারা যুবক আছে তারা আগামী প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাবেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আগামীর বাংলাদেশ হবে সত্যিকারের একটি সুখী সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৮
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।