ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি মোশাররফের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৬ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারির দাবি মোশাররফের সভায় বক্তব্য রাখেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও কেন প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন জারি করে সমস্যার সমাধানেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (১৪ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘দেশনেত্রী মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি বক্তৃতা করছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ ‘সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে’ আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান নেছার।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ড. মোশাররফ বলেন, রমজান মাসে সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। যেন রমজানের পরে গণআন্দোলন গড়ে তোলা যায়। অনেকে বলে বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না। কিন্তু আন্দোলন কখন হবে সেটা নোটিশ দিয়ে হবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলন যেভাবে তিন দিনের মধ্যে হয়েছিল। এ দেশের জনগণ সেভাবে আন্দোলন করবে। জনগণ যখন আন্দোলনে নামবে আমরা তখন তাদের সঙ্গে থাকবো।

ড. মোশাররফের অভিযোগ, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি (প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনা নির্বাচন করেছিলেন। এ সরকার নির্বাচিত নয়। এই সরকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরাচারী হিসেবে স্বীকৃতি। পৃথিবীর সব দেশেই স্বৈরাচারী সরকারের জনভিত্তি না থাকায় গায়ের জোরে সরকার চালায়। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, সেটা নিয়মরক্ষার নির্বাচন, তিন মাস পর আবার নির্বাচন হবে। কিন্তু তিনি তার ওয়াদা রক্ষা করেননি।  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হতে হবে। বর্তমান সংসদ বাতিল করে কিছু দিনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করে নির্বাচন করতে হবে। আমাদের নেত্রী (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) এই ঘোষণা দেওয়ার পরই ষড়যন্ত্র শুরু হলো। তাই তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছে। তাকে যে মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছে, এই ধরনের মামলায় উচ্চ আদালতে আপিল করলে সঙ্গে সঙ্গে জামিন দেওয়া হয়। সবদেশে এটাই নিয়ম। কিন্তু আমাদের নেত্রীকে তা দেওয়া হয়নি।  

খালেদা জিয়াকে আইনিভাবে আর আটকে রাখা সম্ভব হবে না জানিয়ে ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, মঙ্গলবার (১৫ মে) হয়তো তিনি জামিন পাবেন। কিন্তু জামিন হলেও সরকার তাকে মুক্তি দেবে না। তারা নানা কৌশলে তাকে আটকে রাখার চেষ্টা করবে। তাই বলতে চাই, আদালতের ওপর নির্ভর করে তার মুক্তি সম্ভব হবে না। কালকে জামিন হলেও হয়তো তাকে রাজনৈতিক কারণে কারাগারে রাখা হবে। যেহেতু এটা রাজনৈতিক বিষয়, তাই রাজনৈতিকভাবে তাকে মুক্ত করতে হবে। পৃথিবীর কোনও স্বৈরশাসক জনগণের কথা এমনিতে শোনেনি। তাই আন্দোলনের কোনও বিকল্প নাই।

আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে খুলনা এখন ভয়ের নগরীতের পরিণত হয়েছে দাবি করে ড. মোশাররফ বলেন, সেখানে সবাই চিন্তিত, জনগণ মঙ্গলবার ভোট দিতে পারবে কি পারবে না। আমাদের নেতাকর্মীদের ভয় দেখাচ্ছে, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তাদের ভয় দেখাচ্ছে। সেখানে যেন ধানের শীষে কোনও ভোট না পড়ে। পুলিশ-সরকারি কর্মকর্তাসহ ভোটের সঙ্গে জড়িত সবাইকে নিয়ে একটা ভোট ডাকাতি করতে চায়। তারপরও জনগণ যদি ভোট দিতে পারে তাহলে ধানের শীষের প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলীসপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সদস্য সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।