ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

ফ্যাসিবাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
ফ্যাসিবাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে: ফখরুল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: ফ্যাসিবাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এতোদিন নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে দিয়ে স্বৈরতন্ত্রকে পোশাক পরিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার জার্মানির এক গবেষণা প্রতিবেদনে সেই মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে। 
 

শনিবার (২৪ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’র দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।  

ফখরুল বলেন, এরাই একদিন বাকশাল কায়েম করেছিল।

সমস্ত রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেছিল এবং পত্র-পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। একই বাকশাল ভিন্ন মোড়কে প্রতিষ্ঠা করেছে। তাকে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি পোশাকে পরিয়ে রেখেছিল। গতকাল জার্মানির গবেষণায় সেই  মুখোশ পুরোপুরি উন্মোচিত হয়ে গেছে।

বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, আমি মনে করি, বিএনপি কোনো বিপ্লবের দল নয়। বিএনপি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হয়। আমরা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল। তাই অনেক চিন্তা ভাবনা করে এগুতে হয়। কেননা, আমাদের একটি ভুল হলে তার খেসারত জাতিকে দিতে হয়। আমরা ২০১৪ সালের নির্বাচনে যাইনি। তখন বুদ্ধিজীবীরা বলেছিলেন সিদ্ধান্ত সঠিক। আবার তারাই এখন বলছেন যে নির্বাচন বর্জন ছিল ভুল। আলোচনার মধ্যে হতেই পারে। তবে তখনই হবে স্বার্থকতা যখন বিজয় অর্জন হবে। আমরা সমস্ত জাতিকে এক জায়গায়, এক প্লাটফর্মে আনতে চাচ্ছি। এখন দরকার দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা। আমরা সেটার জন্যই কাজ করছি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এই স্বৈরাচারী সরকারের একমাত্র শত্রু। তারা জানে খালেদা জিয়াকে বাইরে রাখলে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। আমরা নির্বাচন চাই, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, মুক্ত খালেদাকে প্রচারণার সুযোগ দিয়ে।  

স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ করে সরকার সফল হবে না জানিয়ে ফখরুল বলেন,  আমি হতাশ হয়েছি। এখানে এসে হতাশার সুর শুনেছি বুদ্ধিজীবীদের থেকে। কেউ হতাশ হবে না। আমাদের ভুল ত্রুটি হতে পারে, তবে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই। আমরা প্রমাণ করেছি যে, আমরা ঐক্যবদ্ধ। এখন নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রেখে অন্যদের একত্রিত করতে হবে।

সরকার পতনের একমাত্র পথ গণ আন্দোলন উল্লেখ করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের তথাকথিত স্বাধীন বিচার বিভাগ শেখ হাসিনাকে স্বৈরশাসক হতে সহায়তা করেছে। কোনো ফ্যাসিবাদের পতন ভোটের মাধ্যমে হবে না, ফ্যাসিবাদের পতনের একমাত্র উপায় হলো বিপ্লব।

পুলিশ আর দলের গুণ্ডাপাণ্ডা দিয়ে শেখ হাসিনা রাষ্ট্র চালাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই শেখ হাসিনা পুলিশ ও থার্ড পার্টি দিয়ে তার ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ চালাচ্ছেন। তিনি আর একটি ইউনিক কাজ করছেন, বিচার বিভাগকে দিয়ে তার স্বৈরতান্ত্রিক কাজ চালাচ্ছেন। যা হিটলার মুসোলিনিও করেনি। এটা শেখ হাসিনার একটি ইউনিক আইডিয়া। বিভক্ত বিচার বিভাগ দিয়ে জনগণের অধিকার হরণ করা হলো। বিচারপতিরা দেশের ইতিহাস রচনা করার দায়িত্ব নিলেন। তারা বললেন, জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা যাবে না। মাননীয় বিচার বিভাগ, বাংলাদেশের ইতিহাস লেখার দায়িত্ব আপনাদের কে দিয়েছে। তারপর সুপ্রিম কোর্ট রায় দিলেন তারেক রহমানের বক্তব্য, বিবৃতি প্রচার করা যাবে না। এসবের মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগ স্বৈরাচারকে সহায়তা করছে। তবে আমি বলে রাখতে চাই, এই বাংলার মাটিতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে এবং সব জুলুমবাজদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন খানের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, ড্যাবের মহাসচিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম ডা. জাহিদ প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
এএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।