ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

খালেদার বেকসুর খালাস চাইলেন মওদুদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
খালেদার বেকসুর খালাস চাইলেন মওদুদ আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় খালেদা জিয়া। ছবি: ডিএইচ বাদল/বাংলানিউজ

ঢাকা: যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বেকসুর খালাস চাইলেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। 

খালেদা জিয়ার পক্ষে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দশম দিনের মতো যুক্তিতর্ক শুনানিতে তিনি এ আবেদন জানান।  

আইনের যুক্তিতর্ক তুলে ধরে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাটি প্রথমদিনেই খারিজ করে দেওয়া উচিত ছিল।

মামলাটি যে এখন চলছে এটাই অস্বাভাবিক।  

‘এটা আইনানুগ হয়নি’ দাবি করে তিনি বলেন, শাসক দলের দ্বারা বিরোধী রাজনীতিকরা সব সময় নির্যাতিত হয়েছেন। নেলসন ম্যান্ডেলা থেকে শুরু করে আমরা জেল খেটেছি। খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানো যাবে কিন্তু এতে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যাবে না। বরং আমি বলতে পারি খালেদা জিয়ায় হচ্ছেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

‘ঘটনার ১৮ বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলার আসল নথি নেই, প্রসিকিউশন তা স্বীকার করেছে। যে নথি তৈরি করা হয়েছে তাও ঘষা মাজা করা নথি। ’

তিনি বলেন, এ বিষয়ে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী একটি আইনানুগ দরখাস্ত দিয়েছেন আশা করি ব্যবস্থা নিবেন।

যুক্তিতর্ক শুনানির শেষ পর্যায়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি প্রমাণিত হয়নি দাবি করে তার বেকসুর খালাস দাবি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ।  

যুক্তিতর্ক শুনানির পর খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিন চান অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। এছাড়া আগামী দুইদিন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।

খালেদার অনুপস্থিতির বিরোধিতা করেন দুদকের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল। শুনানি শেষে বিচারক তা নাকচ করে দেন।

এ দিন খালেদার পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হয়। অপর আসামিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু করার আগে কোর্ট ৩০ মিনিটের বিরতি দিয়ে দেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টা ৩৭ মিনিটে আদালতে উপস্থিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। যুক্তিতর্ক শুরু হয় পৌনে ১২ টায়।

বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে মামলাটির যুক্তিতর্ক চলছে।

খালেদা জিয়ার পক্ষে এর আগে অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার এজে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার যুক্তি উত্থাপন করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির প্রধান আসামি খালেদা জিয়া।

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুদক। এতে অভিযোগ করা হয়, এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
এমআই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।