টরন্টো: বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত নিউ ইয়র্কের ওয়াল স্ট্রিট দখলের জের এখন কানাডায়। এরই মধ্যে দেশটির বিভিন্ন শহর দখলে নেমেছে সাধারন জনতা।
একইমাত্রার শহর দখলমুখী সমাবেশ ঘটেছে পৃথিবীর অন্যত্র। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটের মতো দখল তৎপরতা দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, জাপানের টোকিও, ইতালির রোম এবং জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে। তবে বসনিয়ার সারাজেভোতে শত শত মানুষ চে গুয়েভারার ছবি ও পুরনো কমিউনিস্ট পতাকা হাতে মুখর হয়েছে ‘জনতার মুক্তি, সাম্রাজ্যবাদের পতন’ শ্লোগানে।
টরন্টো দখল তৎপরতায় অংশগ্রহণকারীরা ধনিক কর্পোরেটের আচরণ, ৯/১১ সংক্রান্ত সরকারি ভাষ্য এবং টরন্টোর বিতর্কিত উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে। তাদের শোগানের মুখ্য বিষয় ছিল- ‘আমরাই ৯৯ শতাংশ’, ১ শতাংশ ধনিক শ্রেণী পৃথিবীর সম্পদ হরণ করে আমাদের প্রতিপন্ন করছে’।
আপাতদৃষ্টিতে, বর্তমান বিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এই শহর দখল অভিযানকে অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যে জেগে ওঠা ‘আরব বসন্ত’ বা ‘আরব ¯প্রীং’য়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তবে টরন্টোর সংগঠকরা তাদের এই কার্যক্রমকে ‘জনতার আন্দোলন’ নাম দিয়েছেন।
একইভাবে শনিবারের এই ‘শহর দখল’ তৎপরতার প্রতিফলন ঘটেছে কানাডার বেশ কয়েকটি প্রধান শহরে। উলেখযোগ্য শহরগুলো হচ্ছে - ক্যালগেরি, মন্ট্রিয়ল, ভ্যাঙ্কুভার, হেলিফেক্স, ফ্রেডরিক্টন, মঙ্কটন, গুয়েল্ফ, উইন্ডসর, কিংস্টন, লন্ডন, নানাইমো, কোর্টনি, ডাঙ্কান, কেলোনা, কেম্পলুপস, নেলসন, লেথব্রিজ, রেজাইনা, উইনিপেগ এবং রাজধানী অটোয়ায়। তবে তাদের মাঝে ‘টরন্টো দখল’ই ছিলো সবচেয়ে বড় ঘটনা।
এদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পার এবং অর্থমন্ত্রী জিম ফার্থি জনতার অভিযোগকে পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছেন। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কানাডা অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে মন্দা সামাল দিয়েছে।
তবে অভিযোগকারীরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় কানাডায় ধনি ও গরীবের ব্যবধান দ্রুতই প্রকট হচ্ছে। এছাড়া দরিদ্রতার প্রকোপ, বর্জ্যসৃষ্ট পরিবেশ দূষণ এবং আদিবাসীদের ওপর শোষণ অনেক বেশি। তবে সব কিছুকে ছাড়িয়ে টরন্টো দখলের আয়োজকরা গত বছরের জুনে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন ও চার মাস আগে ভ্যাঙ্কুভারে স্ট্যানলি কাপে যে অরাজকতা হয়েছে, সে ধরণের পরিস্থিতি যতে আর না হয় তার জন্যই সোচ্চার।
ই-মেইল: [email protected]