ঢাকা: এনজিওদের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর বদলে আগামী অক্টোবর মাসে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে (এমএসএমই) ঋণ কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ (এসএমই) বিভাগকে এর নীতিমালা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী মহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর এবং চলতি অর্থবছরে এসএমই খাতে ব্যাপক সফলতা এসেছে। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হয়েছেন। তাই এবার গ্রামের সাধারণ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম) উদ্যোক্তাদের জন্য এমএসএমই চালু করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ দেওয়া হবে।
আগামী অক্টোবর মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের এটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পটি চালু হলে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামের সাধারণ মানুষ ও নারীদের আর এনজিও-নির্ভরশীল থাকতে হবে না। প্রকল্পটি মূলত করা হচ্ছে, এনজিও-নির্ভরতা কমানোর জন্য। কারণ এনজিওদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে গ্রাহকরা সঠিকভাবে কোনো কাজ করতে পারে না। এছাড়া এনজিওদের সুদের হার বেশি আর ঋণ দেওয়ার পরিমাণ অনেক কম।
চৌধুরী মহিদুল হক বলেন, প্রকল্পটি চালু হলে ছোট ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে জামানতবিহীন ঋণ বিতরণ করবে বিভিন্ন ব্যাংক। সুদের হারও থাকবে কম। এতে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এনজিওদের ঋণ কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে। তবে রাতারাতি এনজিওদের ঋণ কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না বলেই এ পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রকল্প চালু হলে ব্যাংকগুলোকে কঠোর নির্দেশও দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই বিভাগের উদ্যোগে জানুয়ারি মাসের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রাহকরা ঋণের টাকা নিয়ে লাভের বিপরীতে অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হন। এর আগে এনজিওর ঋণে সুদ হারের কোনো সীমা নির্ধারণ করা ছিল না।
সম্প্রতি সর্বোচ্চ সুদের হার ২৭ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরও নির্ধারিত এ সুদের হার ব্যাংকের তুলনায় অনেক বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে এনজিওগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকা। তাদের সঞ্চয় ১৩ হাজার কোটি আর নেট আউটফ্লো সাত হাজার কোটি টাকা। যা ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের তুলনায় অনেক কম।
তবে গ্রামাঞ্চলে ব্যাংকগুলো এখনও সেভাবে পৌঁছতে না পারায় সেখানে এনজিওদের দেওয়া ঋণের গ্রাহক বেশি। ফলে ব্যাংকগুলোকে গ্রাম পর্যায়ে শাখা খোলার প্রতি জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে ব্যাংকের দিকে সাধারণ মানুষকে আগ্রহী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২০১০ সালে ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ৫২ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে। চলতি অর্থবছরে ৬২ হাজার কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কম সুদে এ ঋণ বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, ৭ এপ্রিল, ২০১১