ঢাকা: প্রায় তিন দশক ধরে নিরুদ্দেশ জাতীয় চার নেতা হত্যা (জেল হত্যা) মামলার অন্যতম দুই আসামি দফাদার মারফত আলী শাহ ও আবুল হাশেম মৃধা।
মারফত আলীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবে।
বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, দফাদার মারফতকে প্রায় ২৫ বছর এলাকায় দেখেনি কেউ। আর হাশেম মৃধা এলাকা ছেড়েছেন বছর তিরিশেক হলো।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, জেল হত্যা মামলার অন্যতম এ দুই আসামিকে ঘৃণা করেন তাদের প্রতিবেশী-এলাকার মানুষ। আত্মীয়-স্বজনরাও বিব্রত তাদের পরিচয় নিয়ে।
কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের গকুলনগর গ্রামের মৃত আব্দুল আলীম সরদারের বড় ছেলে দফাদার মারফত আলী শাহ।
তার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে পাশ্ববর্তী ছাগাইয়া গ্রামের সাবেক মেম্বার আকবর আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘দফাদার মারফত আলী এলাকায় আসেন না প্রায় ২৫ বছর। তিনি বর্তমানে সপরিবারে লিবিয়ায় রয়েছেন বলে শুনেছি। ’
পার্শ্ববর্তী গ্রামের আক্কাছ আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘তার ঘনিষ্ঠজন বলতে এক ভাই উলফত আলী (৬৫) ও এক বোন দুধ নেহের (৬০) রয়েছেন। এখন উভয়েই হতদরিদ্র জীবনযাপন করছেন। ’
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে চাচাতো ভাইয়ের কাছে প্রায় ৩০ বছর আগে নিজ বসতভিটা বিক্রি করে আত্নগোপনে চলে গেছেন জেলহত্যা মামলার অন্যতম আসামি আবুল হাশেম মৃধা।
তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম মুন্সীয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা মৃত সাহাবুল্লাহ মৃধা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সোলায়মান মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ৩০ বছর আগে জেলহত্যা মামলার আসামি আবুল হাশেম মৃধা বসতভিটে ছেড়ে পালিয়ে যান। সে সময় চাচাতো ভাইয়ের কাছে বসতভিটে-জমিজমা বিক্রি করে যান তিনি।
সোলায়মান মিয়া আরো জানান, দীর্ঘদিন আগে গ্রামের ভিটেমাটি ও জমিজমা বিক্রি করে চলে যাওয়ায় আবুল হাশেম মৃধার খবর এখন আর কেউ রাখেন না। সবাই তাকে ঘৃণা করেন। তাছাড়া তার স্বজনদের কেউই তার পরিচয় দিতে চান না।
তার এক ভাই থাকেন মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কাজীর পাগলায়। বোনেরা থাকেন ঢাকাতে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার জাতীয় চার নেতা হত্যামামলায় রাষ্ট্রপে লিভ টু আপিল আবেদন মঞ্জুর করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
এর আগে হাইকোর্টের রায়ে খালাস পাওয়া আবুল হাসেম মৃধা ও দফাদার মারফত আলী শাহকে অবিলম্বে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১১